হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকছেন কর্মচারীরা,এনএইচএম-এর বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ধলাই জেলার গণ্ডাছড়া মহকুমা একটি প্রত্যন্ত এলাকা। এই এলাকার মহকুমা হাসপাতাল এনএইচএম-এর অধীনে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য স্কিম পরিচালনা করে। যেমন জননী শিশু সুরক্ষা কর্মসূচি (জেএসএসকে), আশা কর্মীদের ভাতা বিতরণ, গর্ভবতী মায়েদের ডায়েট এবং রেফারেল সুবিধা ইত্যাদি। এই স্কিমগুলো প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র ও জনজাতি পরিবারগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এগুলো ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা প্রায় অসম্ভব।
অভিযোগ এনএইচএম দপ্তরটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থা, দুর্নীতি এবং অদক্ষতার শিকার হয়েছে। দপ্তরের বিরুদ্ধে লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনগণের মতে, এই অব্যবস্থা সরকারী স্কিমের সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করছে এবং সরকারের ভাবমূর্তিকে কলুষিত করছে।
দিনের পর দিন অফিস খালি থাকে। কর্মীরা নিজেদের মতো করে আসা-যাওয়া করেন। যার ফলে দপ্তরটি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। একাংশ কর্মীকে পনেরোদিনে একবারও অফিসে দেখা যায় না।
প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আশা কর্মীরা নিজেদের খরচে অফিসে এসে বিভিন্ন স্কিমের টাকা, ভাতা সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হন এবং খালি হাতে ফিরে যান। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কমিশন আদায় করা হয় বলে অভিযোগ। এতে আশা কর্মীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
এদিকে অফিসের অ্যাকাউন্টেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অফিস ফাঁকি দিয়ে বাড়িতে বসে মাইনে গ্রহণ করেন এবং একাধিক ব্যবসা চালান। স্বাস্থ্য দপ্তরের কেন্দ্রীয় স্কিমের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ রয়েছে।
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক অভিযোগ হলো, জেএসএসকে প্রকল্পের অধীনে প্রসূতি মায়েদের ডায়েট না পাওয়া। গর্ভবর্তী মায়েরা আসা-যাওয়ার জন্য পাঁচশো টাকা এবং রেফারেলের জন্য এক হাজার টাকা পাওয়ার কথা, কিন্তু গণ্ডাছড়ার মায়েরা এসব থেকে বঞ্চিত। এই অভিযোগগুলো স্থানীয় জনগণের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করছেন যে এই অব্যবস্থা সরকারের সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করছে এবং সরকারের ভাবমূর্তিকে কলুষিত করার উদ্দেশে ঘটছে।
আশা কর্মীরা এবং গর্ভবতী মায়েরা সরকারী সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে অতিরিক্ত খরচ বহন করছেন। প্রত্যন্ত এলাকায় যোগাযোগের অভাবে এই খরচ আরও বাড়ছে।
গর্ভবর্তী মায়েদের ডায়েট এবং রেফারেল সুবিধা না পাওয়ায় প্রসব-পরবর্তী জটিলতায় পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। জনজাতি সম্প্রদায়ের মাতৃমৃত্যুর হার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, স্থানীয় জনগণের মধ্যে সরকারের প্রতি অবিশ্বাস বাড়ছে। এক শ্রেণীর অসাধু কর্মীর জন্য পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে, গণ্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত এসডিএমও চিরঞ্জিত দাসের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার কাছে এ বিষয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। অপরদিকে এ বিষয়ে ধলাই জেলার সঙ্গে একাধিকবার স্বাস্থ্য আধিকারিক অ্যাপোলো কলইর যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Dainik Digital: