সুস্থ পরিবেশ আস্থা বাড়ায়: মুখ্যমন্ত্রী

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত। বিশেষ করে গত চার বছরের কথা বললে এই সময়ের মধ্যে রাজ্যে সব দিক থেকেই অগ্রগতি এসেছে। আরও একধাপ এগিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় শারদ সম্মান প্রদানের এক অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, গত চার বছরে তেমন কোনো অঘটনের খবর নেই রাজ্যে। রাজ্যের মানুষ এমনই একটি সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশ দেখতে চায়। এই পরিবেশে আস্থা পেয়েছে বলে রাজ্য জুড়ে এখন বেড়েছে পুজোর সংখ্যাও। গোটা রাজ্যে এ বছর কম করেও তিন হাজারেরও অধিক পুজোর আয়োজন করা হয় বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
পনেরোতম বর্ষপূর্তিতে এদিন ছিলো হেডলাইনস ত্রিপুরা ন্যাশনাল আয়োজিত শারদ সম্মান অনুষ্ঠান। আগরতলার শতবার্ষিকী ভবনের প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সেরা দশ হিসাবে মোট দশটি ক্লাবকে পুরস্কৃত করা হয়। সারিতে ছিলো কুঞ্জবন স্পোর্টিং ইউনিট, প্রান্তিক ক্লাব, ছাত্রবন্ধু ক্লাব, সংহতি, ভারতরত্ন সংঘ, শতদল সংঘ, মডার্ন ক্লাব, দশমীঘাট ক্লাব, ফ্লাওয়ার্স ক্লাব ও ঐকতান যুব সংস্থা। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তিনটি বিভাগে আরও মোট বিয়াল্লিশটি ক্লাবকে পুরস্কৃত করে হেডলাইনস ত্রিপুরা কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, মন্ত্রী রতনলাল নাথ, সুশান্ত চৌধুরী, মেয়র দীপক মজুমদার, রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী শুভকামানন্দ, দৈনিক সংবাদ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক সঞ্জয় পাল, বন্ধন গ্রুপের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ঘোষ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুকান্তলাল সাহা, বিশিষ্ট আইনজীবী পীযূষ কান্তি বিশ্বাস, তিপ্রা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মণ, এডিসির সিইএম পূর্ণচন্দ্র জমাতিয়া পুরস্কারপ্রাপক বিভিন্ন ক্লাবগুলির প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কারস্বরূপ ট্রফি তুলে দেন। অনুষ্ঠানের শেষলগ্নে এদিন কলকাতা থেকে আগত শিল্পী শোভম গাঙ্গুলীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিলো আয়োজিত অনুষ্ঠানে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। সাথে ছিলেন রাজ্যের বাচিক শিল্পী শুভ্রজিৎ ভট্টাচার্যও। সঙ্গীতমুখর এই গোটা অনুষ্ঠানটির পরিচালনায় ছিলেন চন্দ্রা রায়।অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত চার বছরে প্রায় সব দিক থেকেই অগ্রগতি লক্ষ্য করা গিয়েছে রাজ্যে। সুস্থ স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৌজন্যে এখন পুজো উদ্যোক্তাদের উৎসাহও বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। বেড়েছে পুজোর সংখ্যাও। শুধুমাত্র বাঙালি অংশের জনগণ নয়, এখন এই পুজো বিস্তৃতি লাভ করেছে জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতেও। তিনি বলেন, আভাস কয়েক আগে উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় বিজনেস সামিট অনুষ্ঠিত হয় রাজ্যে। নখানেও রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে খুশি বিনিয়োগকারীরা গোটা উত্তর বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে যখন ত্রিশ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের মউ ক্ষর করেন তখন শুধুমাত্র এ রাজ্যের জন্য পনেরো হাজার কোটি টাকারও বেশি ভি স্বাক্ষর করলেন তারা। মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি, এসব থেকেই বোঝা যায় যে সঠিক পথেই চলছে রাজ্য।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে শারদ সম্মান প্রদানের এই অনুষ্ঠান থেকে হেডলাইনস ত্রিপুরা ন্যাশনালের কর্ণধার প্রণব সরকারের প্রশংসা করার পাশাপাশি তিনি ভলাইনস ত্রিপুরারও ব্যাপক প্রশংসা করেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও একবার গুলিরও ব্যাপক প্রশংসা করেন। বললেন, আগেকার মতো সংস্কৃতি এখন আর গুলিতে নেই। পুজোকে সামনে রেখে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলিকে জন্য দিয়েছে পুজো উদ্যোক্তারা। দা আর অস্ত্রের ঝলকানির সংস্কৃতি থেকে এসে ক্লাবগুলির আয়োজনে এখন সব প্যান্ডেলে প্যান্ডেলেই দেখা গিয়েছে নেশামুক্ত ত্রিপুরার বার্তা, না হয় রক্তদান, বৃক্ষরোপণ, প্লাস্টিক বর্জন- এমন বিষয়গুলি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সবকা সাথ সবকা বিকাশের কে এখন কথায় নয়, কাজেও বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। কৃষ্টি-সংস্কৃতির উন্নতির পাশি আর্থ সামাজিক সব দিক থেকেই অগ্রগতি আসছে রাজ্যে। ইতিমধ্যেই রানার স্টেট হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে এ রাজ্যকে।এছাড়া মাথাপিছু ব দিক থেকে গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হয়েছে ত্রিপুরা।ভডিপির কথা বললেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে এ রাজ্য।এক কথায় প্রধানমন্ত্রীর মার্গ দর্শনে সার্বিকভাবে অগ্রগতি এসেছে রাজ্যের।অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিপ্রা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মণ বলেন, ভালো উদ্যোগ হেডলাইনস ত্রিপুরার। গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে এ রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয় শারদোৎসব। এতে পাহাড়ি-বাঙালি নয়, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, শিখ সব ধর্মাবলম্বীরাই শামিল হন। এ থেকেই বোঝা যায় ঐক্য, সংহতি আছে এখানে। এই ঐক্য ও সংহতি রক্ষায় তিনি সর্বদা ময়দানে থাকবেন বলেও জানান এদিন। বক্তব্য রাখেন বিবেকনগর রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী শুভকামানন্দজী, সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকেই। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন হেডলাইনস ত্রিপুরা ন্যাশনালের কলকাতা শাখার প্রধান হৃতিক মুখার্জি।

Dainik Digital: