অনলাইন প্রতিনিধি:-দেশের গরিব মানুষের চিকিৎসা ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সারাদেশে ‘আয়ুষ্মান যোজনা প্রকল্প’ চালু করেছিলেন। এই প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে দেশের কোটি কোটি গরিব মানুষ এবং তাদের পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা সহায়তা পেয়ে আসছে। এই প্রকল্প দেশের গরিব মানুষের কাছে অনেকটা আশীর্বাদের মতো। দেশের গরিব মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে দারুণভাবে উপকৃত হচ্ছেন। কিন্তু বিস্ময়কর ঘটনা হলো, সুশাসনের ত্রিপুরা রাজ্যে আয়ুষ্মান প্রকল্প বড় ধরনের আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। সবথেকে বড় কথা হচ্ছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু গরিব মানুষই সুবিধা পাচ্ছে না, দেশের বিভিন্ন স্তরের স্বাস্থ্য কর্মীরাও এই প্রকল্প থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকেন। যেমন এই প্রকল্পে ৭০ শতাংশ বরাদ্দ অর্থ ব্যয় করা হয় রোগীদের চিকিৎসা খাতে। বাকী ৩০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের ইনসেন্টিভ প্রদানে। আরও স্পষ্ট করে বললে, এই ৩০ শতাংশের মধ্যে চিকিৎসকরা পান ১০ শতাংশ, সেবিকারা (নার্স) পান ৫ শতাংশ, বাকি ৫ শতাংশ পান জিডিএ, সাফাই কর্মী ইত্যাদি। অভিযোগ, রাজ্যে এই ৩০ শতাংশ অর্থ নিয়েই বড় ধরনের দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অর্থাৎ স্বাস্থ্য কর্মীদের এই অর্থ (ইনসেন্টিভ) সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কোথাও কোথাও ছয়-সাত মাস পর টাকা দেওয়া হয়। এই টাকা প্রদানের ক্ষেত্রেও গড়মিল রয়েছে বলে অভিযোগ। টাকার পরিমাণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রাজধানীর জিবি, আইজিএম, ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে শুরু করে রাজ্যের সব কটি সরকারী হাসপাতালে একই অবস্থা বলে অভিযোগ। জানা গেছে, আয়ুষ্মান প্রকল্পের সুবিধাভোগী কোনও রোগী যদি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন, তাহলে ওই রোগী যতদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকবেন, প্রতিদিন সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা খরচ পেয়ে থাকেন। অথচ রোগীরা ভালো মানের ওষুধ পায় না বলে অভিযোগ। ডাক্তারবাবুরা হাসপাতালে সরকারী সাপ্লাই হিসেবে যে ওষুধ থাকে, সেগুলিই রোগীদের দেন। প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে আয়ুষ্মান মিত্র কর্মী আছেন। তাদের কাজ হলো এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী কোনও রোগী এলে তাদের সব দিক দিয়ে সহায়তা করা। অভিযোগ, আয়ুষ্মান মিত্র কর্মীদের কাছ থেকে রোগীরা সেভাবে কোনও সহায়তা পায় না। তাদের হাবভাব এমন, যেন এই কাজটি তারা নিতান্ত ঠেকায় পড়ে করছেন। তাদের এই কাজ করার যেন কোনও ইচ্ছেই নেই। রোগী এবং রোগীর পরিজনদের সাথে তাদের ব্যবহার নিয়েও নানা অভিযোগ উঠছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, ওই ৩০ শতাংশ অর্থ কোথায় যাচ্ছে? কোথায় জমা হচ্ছে? অথবা কীভাবে খরচ হচ্ছে? এনিয়ে কিন্তু স্বাস্থ্য কর্মীরাই দুর্নীতি এবং অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে।