অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সাধারণ ডিগ্রি কলেজে মাস্টার ডিগ্রি কোর্সের পড়াশোনা লাটে উঠেছে। যদিও ২০২২ সালে ৬টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে মাস্টার ডিগ্রি কোর্স চালু করেছিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর। ন্যূনতম পরিকাঠামো ছাড়া কোর্স চালুর খেসারত দিচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যেকোনো মুহূর্তে মাস্টার ডিগ্রি কোর্সে ছাত্রছাত্রী ভর্তির অনুমোদন বাতিল হতে পারে। অথচ শীতঘুমে উচ্চশিক্ষা দপ্তর! জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী রাজ্য সরকারের ছয়টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে পড়াশোনা চালু করা হয়নি। উল্টো চার বছর হয়ে গেলেও পাঠরত ছাত্রছাত্রীর অনুপাতে অধ্যাপক অধ্যাপিকা পর্যন্ত মাস্টার ডিগ্রি কোর্সের জন্য নিয়োগ হলো না। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের ব্যর্থতার বিষয়গুলি সম্প্রতি প্রমাণ সহ কেন্দ্রীয় সরকারের নজরেও গিয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে মাস্টারডিগ্রি কোর্স বন্ধ হচ্ছে বলে খবর। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই বৈঠকের পর বৈঠক দপ্তরে হলেও ছাত্রস্বার্থে সিদ্ধান্ত অধরা। ফলে ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কলেজ প্রশাসন।
অভিযোগ, রাজ্যে রাতারাতি মাস্টার ডিগ্রি কোর্স চালু হলেও গত সাড়ে তিন বছরে মাস্টার ডিগ্রি কোর্সের জন্য একজনও অধ্যাপক/অধ্যাপিকা নিয়োগ হলো না। একাংশ অতিথি শিক্ষক দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে পঠনপাঠন। স্নাতকোত্তর কোর্সের জন্য নিয়মিত পদে অধ্যাপক অধ্যাপিকা নিয়োগ তো দূরস্থ। এরমধ্যে তিনটি কলেজে বাংলা ও ইংরেজি বিভাগে একজনও অতিথি শিক্ষক শিক্ষিকা পর্যন্ত নেই। জেরক্স নির্ভর পড়াশোনা জুটেছে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের। উচ্চশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ছয়টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে মাস্টার ডিগ্রি কোর্স চালু করা হয়। রাজধানী আগরতলার এমবিবি কলেজ ও মহিলা কলেজ, ধর্মনগর কলেজ, উদয়পুর কলেজ, কৈলাসহর ও বিলোনীয়া কলেজে ইংরেজি ও বাংলায় এম এ কোর্স চালু করেছিল শিক্ষা দপ্তর। উভয় কোর্সে ৩০টি করে মোট ৬০টি আসন রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বাংলা ও ইংরেজি কোর্সে ২০টি করে মোট ৪০টি আসনে পঠনপাঠন চালু হয়ে যায়। জানা গিয়েছে মাস্টার ডিগ্রি কোর্সের জন্য ন্যূনতম বেতনে নিযুক্ত অধিকাংশ অতিথি শিক্ষক শিক্ষিকারা বর্তমানে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
স্নাতকোত্তর কোর্সের জন্য গ্রন্থাগার (লাইব্রেরি) নেই।পাঠ্যপুস্তক নেই। ছাত্রছাত্রীদের জন্য নেই ক্লাসরুম। ইন্টারনেট পরিষেবা নেই।সাধারণ ডিগ্রি কলেজের ক্লাস রুমগুলিতে মাস্টার ডিগ্রি কোর্স চালু করে দেওয়া হয়। এইসব জ্বলন্ত সমস্যা চাপা দিয়ে উচ্চশিক্ষা দপ্তর ছয়টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করেছিল। যা ভূভারতে ব্যতিক্রম।অভিযোগ, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপর চাপ দিয়ে প্রথমে ছয়টি ডিগ্রি কলেজে মাস্টার ডিগ্রি কোর্স চালু হয়।
ছাত্রছাত্রী ও কলেজে কর্মরত শিক্ষকদের অভিযোগ, যেখানে কলেজগুলিই বর্তমানে শিক্ষক ও পরিকাঠামোগত সমস্যায় ধুঁকছে, সেখানে উল্লিখিত কলেজগুলিতে দুটি বিষয়ে এম এ কোর্স চালু করার যৌক্তিকতা কোথায়? প্রফেসর পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ।ইংরেজি ও বাংলা এম এ কোর্সে কারা পড়াবেন? কেন অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপক নিয়োগ করা হলো না? ক্লাস রুম, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের ব্যবস্থার জন্য আসা অর্থের কী হলো? এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।