শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে কোনও আপস নয় : মুখ্যমন্ত্রী।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বর্তমান রাজ্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। ভিন্নতর বোর্ডের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে গুণগত শিক্ষার তারতম্য মেটাতে ২০১৯-২০ সালে এনসিইআরটি পাঠক্রম চালু করা হয়েছে।ত্রিপুরার র্বোড তথাব বিদ্যালয়গুলির পরীক্ষা ব্যবস্থায়ও পরিবর্তন ঘটানো বিদ্যালয়গুলির জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি করা হচ্ছে।চালু করা হয়েছে বছর বাঁচাও প্রকল্প। সোমবার রবীন্দ্র ভবনে রাজ্যভিত্তিক টিচিং লার্নিং মেটেরিয়ালস (টিএলএম) প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এমনটাই বলেন । তিনি বলেন, গুণগত শিক্ষা প্রদানে রাজ্য সরকার দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করছে। শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতি ও কর্মসূচি তৈরি করা এবং প্রকৃত অর্থে এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতেই সরকার যাবতীয় পরিকল্পনা স্থির করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে রাজ্য সরকার কোনও ধরনের আপোশ করবে না। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ওয়ার্কশিটের আবরণ উন্মোচন করেন। শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের আটটি জেলার টিএলএম সামগ্রীর প্রদর্শনী স্টলগুলো পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে মত বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের ৫ জুলাই দেশব্যাপী নিপুন মিশন চালু করা হয়। রাজ্যে ২০২২ সালের ১৮ নভেম্বর ‘নিপুন’ ত্রিপুরা চালু করা হয়। “নিপুন ত্রিপুরার সাফল্য নির্ভর করছে রাজ্যের শিক্ষকদের উপর। শিক্ষকরাই হচ্ছেন এই মিশনের মূল চালিকাশক্তি। বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েও শিক্ষকরা শ্রেণীকক্ষে নিপুন’ ত্রিপুরা থেকে বিভিন্ন শিক্ষণ ও শেখার সামগ্রী (টিএলএম) ব্যবহার করে উদ্ভাবনী ভাবনায় শিক্ষাদান করতে সক্ষম হচ্ছেন। সম্প্রতি পুণেতে জি ২০ সম্মেলনে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের চার সদস্যের একটি টিম ত্রিপুরার প্রতিনিধিত্ব করে এবং আন্তর্জাতিক ইভেন্টে ‘নিপুন’ ত্রিপুরার বিষয়টি মেলে ধরেন। রাজ্যের শিক্ষকদের তৈরি টিএলএম সামগ্রীগুলি বিশেষভাবে প্রশংসিতও হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা করার জন্য বন্দে ত্রিপুরা নামে একটি শিক্ষামূলক চ্যানেল চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতা বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকার ২০২০-তে ‘ত্রিপুরা সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন’ এবং ‘ম্যাথ ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন’ চালু করেছে। ৩০ জন মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে জেইই/এনইইটি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য জাতীয়মানের প্রতিষ্ঠানে কোচিং নেওয়ার জন্য প্রতি বছর রাজ্য সরকার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। ককবরক, মণিপুরি, চাকমা, হালাম, মগসহ আটটি জনজাতি ভাষায় পাঠ্যবই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিলি করা হচ্ছে। কলেজস্তর পর্যন্ত পড়াশোনার ক্ষেত্রে ছাত্রীদের টিউশন ফি মকুব করা হয়েছে। নবম শ্রেণীতে পাঠরত প্রায় এক লক্ষ ছাত্রীকে বিনামূল্যে সাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার চলতি অর্থবর্ষের বাজেটেও শিক্ষা ব্যবস্থার
উন্নয়নকে সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়েছে। পিএম শ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি ব্লকে একটি করে মডেল স্কুল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এরজন্য ৫০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। দুর্বল ও অনগ্রসর ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে ভর্তি করার আবেদনের সুবিধার জন্য একটি পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। সাইকেল টু গার্লস স্টুডেন্ট প্রকল্পে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজ্য সরকার ছাত্রীদের মধ্যে ৪৪,৬০০ টি বাইসাইকেল বিতরণ করেছে।প্রকল্পটি
২০২৩-২৪ অর্থবছরেও চালু থাকবে। এরজন্য বাজেটে নয় কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা’ নামে একটি নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে দ্বাদশমান পরীক্ষায় প্রথম ১০০ জন স্থানাধিকারী ছাত্রীদের বিনামূল্যে স্কুটি প্রদান করা হবে। পিএম শ্রী এবং বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে ৪০০টি সরকারী বিদ্যালয়ের আধুনিকীকরণ করা হবে। এছাড়াও রাজ্যের শিক্ষার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য আগামী পাঁচ বছরে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের যুব সম্প্রদায়কে দেশসেবায় উৎসাহিত করার জন্য রাজ্য সরকার প্রত্যেকটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ত্রিপুরা অগ্নিবীর কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে তুলতে ১১টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের সহায়তায় বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম চালু করা হয়েছে। এই দক্ষতা উন্নয়নের পাঠ্যক্রমগুলি ছাত্রছাত্রীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভাল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মৌলিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই নিপুন ত্রিপুরা প্রকল্প চালু করা হয়। তাতে প্রাক-প্রাথমিক স্তর থেকে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। রাজ্যের ৪ হাজার ২০০-এর উপর সরকারী ও সরকারের সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়কে ‘নিপুন’ ত্রিপুরা মিশনের আওতায় আনা হয়েছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন এনসিইআরটির অধিকর্তা এন সি শর্মা, বুনিয়াদি শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। অনুষ্ঠানমঞ্চে সাক্ষরতা এবং সংখ্যাতের হিসাবে সেরা পাঁচটি টিচিং লার্নিং মেটেরিয়ালসকে (টিএলএম) পুরস্কৃত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারস্বরূপ ট্রফি ও শংসাপত্র তুলে দেন।

Dainik Digital

Recent Posts

ইন্ডিগো ফ্লাইটে বোমার হুমকি!! কলকাতা বিমানবন্দর হাই অ্যালার্ট!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উচ্চ সতর্কতা জারি করা…

13 hours ago

আওয়ামী লীগের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গেজেট নোটিফিকেশন দিয়ে আওয়ামী লীগের সবরকম কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসন…

14 hours ago

অবসর নিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সুপ্রিম কোর্টের ব্যাটন তুলে দিয়ে গেলেন বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের হাতে। বুধবার ১৪…

15 hours ago

সিঁদুর’ প্রসঙ্গে বিজেপির ১০ দিনের ‘তিরঙ্গা যাত্রা’!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে প্রচারে নামতে চলেছে বিজেপি।পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ায় ভারতীয় সেনা বাহিনীকে ধন্যবাদ…

15 hours ago

পুরনো ছন্দে ফিরছে উপত্যকা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে শ্রীনগর। শ্রীনগর বিমানবন্দরও মঙ্গলবার খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তা ঘাটে স্বাভাবিক…

16 hours ago

পঞ্জাবের বায়ুসেনাঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে সামরিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা প্রশমনের পর মঙ্গলবার…

17 hours ago