অনলাইন প্রতিনিধি :-বিহার বিধানসভার ২৪৩টি আসনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের ১২১টি আসনের ভোটগ্রহণের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামীকাল সকাল থেকে ১২১টি বিধানসভা আসনে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। ভোট কর্মীরা আজ সন্ধ্যার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ভোট গ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে ইভিএম নিয়ে পৌঁছে গেছেন।প্রথম পর্যায়ে আগামীকাল আঠারোটি জেলার অন্তর্ভুক্ত ১২১টি বিধানসভা আসনে ভোট গ্রহণ হবে। জেলাগুলি হলো পাটনা, দ্বারভাঙ্গা, বৈশালী, নালন্দা, বেগুসরাই, লক্ষ্মীসরাই, মুঙ্গের, বক্সার, ভোজপুর, শেখপুরা, সমস্তিপুর, সারান, সিওয়ান, গোপালগঞ্জ,মুজাফফরপুর, সহরশ এবং মাধেপুর। এই আঠারোটি জেলার ১২১টি আসনে মোট ভোটার হচ্ছেন তিন কোটি পঁচাত্তর লক্ষের কিছু বেশি। এই ভোটাররা আগামীকাল ১.৩১৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। এই ১,৩১৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ১২২ জন মহিলা প্রার্থী এবং একজন তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী রয়েছেন। নাম প্রীতি কিন্নর। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার ভোরে বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জন সুরাজ পার্টির প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আগামীকাল প্রথম পর্যায়ে যে ১২১টি আসনে ভোট গ্রহণ হবে, এর মধ্যে এনডিএ জোটের জেডিইউ সর্বাধিক সাতান্নটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তারপরে বিজেপি আটচল্লিশটি আসনে, এলজেপি (রামবিলাস) চৌদ্দটি আসনে এবং জাতীয় লোক মোর্চা দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।অন্যদিকে মহাজোটের আরজেডি সর্বাধিক তিয়াত্তরটি আসনে।তারপরে কংগ্রেস চব্বিশটি আসনে, সিপিআই এবং সিপিআই (এমএল) পঁচিশটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। নবগঠিত জন সুরাজ পার্টি প্রথম পর্যায়ে ১১৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ভোটের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সকলের নজর থাকবে দুটি প্রধান জোটের উপর। একদিকে ক্ষমতাসীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) এবং অন্যদিকে বিরোধী মহাজোট। প্রথম পর্যায়ে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন সরকারের ষোলজন মন্ত্রীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে। যার মধ্যে এগারোজন বিজেপির। প্রথম ধাপে হেভিওয়েট প্রার্থীরা হলেন আরজেডি নেতা তথা মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী মুখ তেজস্বী যাদব, তার ভাই তেজপ্রতাপ যাদব (জনশক্তি জনতা দল) মহুয়া আসন থেকে লড়াই করছেন। উপমুখ্যমন্ত্রী বিজেপির সম্রাট চৌধুরী এবং বিজয় কুমার সিনহা। যথাক্রমে তারাপুর এবং লক্ষ্মীসরাই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও বিশিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে নতুন মুখ আলিনগর আসনে লড়াই করছেন বিজেপির মৈথিলী ঠাকুর এবং ছাপরা আসন থেকে ভোজপুরি অভিনেতা-গায়ক শত্রুঘ্ন যাদব।
বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজেপি প্রার্থী বিজয় কুমার সিনহা এবার নিয়ে ছয়বার লক্ষ্মীসরাই থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন- ২০১০, ২০১৫ এবং ২০২০ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রটি ছিল বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের বিহার বিধানসভায় এনডিএ জিতেছিল ১২৫টি আসন আর বিরোধী জোট জয়ী হয় ১১০টি আসনে। সব মিলিয়ে প্রথম পর্যায়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বহু চর্চিত এসআইআর-এর পর বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে। তাই অতি সক্রিয় নির্বাচন কমিশন। প্রথম পর্যায়ে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু ও নিবিঘ্ন করাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন এই প্রথম প্রতিটি আসনের জন্য একজন করে সাধারণ পর্যবেক্ষক মোতায়েন রাখছে। ভোট প্রক্রিয়ায় নিবিড় নজরদারির জন্য সব ভোটকেন্দ্রে থাকছে ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা। যেকোনো রকম হিংসাত্মক ঘটনায় জিরো টলারেন্স পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রেই থাকবে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী। এছাড়াও অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিটি স্পর্শকাতর এলাকায় মোতায়েন থাকবে। সব মিলিয়ে হাইভোল্টেজ বিহার বিধানসভা ভোটের দিকে এখন গোটা দেশবাসীর নজর। আগামী এগারো নভেম্বর হবে বাকি ১২২টি বিধানসভা আসনের ভোট গ্রহণ। এরও প্রস্তুতি একেবারে অন্তিম পর্যায়ে। বিহার নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ২৪৩টি আসনের জন্য এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ২৬০০ জন প্রার্থী।মোট ভোটার সাত কোটি আটাশ লক্ষ।