অনলাইন প্রতিনিধি :-তিন রাজ্যের ভোটের ফলাফল ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিজয় সুনিশ্চিত করেছে। ফলাফলের হ্যাটট্রিক ২৪-এর লোকসভার নির্বাচনের প্রতিফলন।ফের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন প্রধান নরেন্দ্র মোদি। লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরার দুটি আসনেও জিততে চলেছে পদ্ম শিবির।মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়ের ভোটের ফলাফলে এটা নিশ্চিত হয়ে গেছে।সোমবার প্রদেশ বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই বললেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা।তার কথায়, “তিসরি বার মোদি সরকার’,‘বারবার মোদি সরকার’ এটি এখন আর স্লোগান নয়, মন্ত্রে পরিণত হয়েছে।এটি ১৩২ কোটি ভারতবাসীর বিশ্বাস ও ভরসার মন্ত্র।তিনি বলেন,
উন্নয়নের জন্য বিজেপির প্রতিশ্রুতির উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকাঠামো উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। যা নির্বাচনে এই রাজ্যগুলিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচনের ফলাফল প্রমাণ করেছে প্রধানমন্ত্রী সবকা সাথ, সবকা বিকাশের মন্ত্র মানুষকে কতটা প্রভাবিত করেছে।জনগণ এই নির্বাচনে কংগ্রেসকে প্রত্যাখ্যান করেছে।জনগণ যে কংগ্রেসকে আর চায় না তা আবার প্রমাণিত হয়েছে।ফলাফলে এই হ্যাটট্রিক ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রতিফলন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে লড়াই প্রধানমন্ত্রী মোদি শুরু করেছেন তার প্রতি মানুষের সমর্থনের প্রতিফলন এই ফলাফল।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই জয় দরিদ্র ও বঞ্চিতদের জয়। কংগ্রেসকে শুধুমাত্র নির্বাচনের সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা যায়।আর বিজেপি ৩৬৫ দিন মানুষের পাশে থাকার পার্টি।২০১৪ সালে যে কংগ্রেস মুক্ত ভারতের কথা বলা হয়েছে তা জনগণ আবারও প্রমাণিত করে দিয়েছে।কংগ্রেসের এখন রাজনীতির শেষ সময়। এই নির্বাচনে বিজেপির জয় সারা বিশ্ব প্রভাবিত হবে এবং দেশের সুস্থিতি ও উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ কারীদের আশ্বস্ত করবে। দেশের জনগণ শক্তিশালী ও মজবুত সরকারের জন্য ভোটদান করে সেটা সারা বিশ্বের জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি সরকার শুধু নীতি প্রণয়ন করে না,তারা সঠিক লাভ্যার্থীদের কাছে উন্নয়নের সুফল পৌঁছানো নিশ্চিত করে। ভোটাররা হাওয়ায় ভাসমান বক্তব্যও মিথ্যা প্রতিশ্রুতিকে বিশ্বাস করেনা। মানুষ উন্নয়ন ও সুশাসনের সঠিক দিশাকে সমর্থন করে। এই জয় যারা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় এবং নিজেদের আড়াল করে তাদের কাছে এক সুস্পষ্ট সতর্কবার্তা দিয়েছে। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির এই জয় হচ্ছে আত্মনির্ভর ভারত, সততা স্বচ্ছতা ও সুশাসনের জয়। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের জনগণকে বিজেপির প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।তেলেঙ্গানাতেও বিজেপির জনগণের সমর্থন পেয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন,এই নির্বাচনের সময় জনগণকে জাতপাতের ভিত্তিতে বিভাজিত করার চেষ্টা হয়েছিল।দেশের এই তিন রাজ্যের মানুষ ভোটে তার জবাব দিয়েছেন।নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার বার বলেছেন দেশে শুধুমাত্র ৪টি জাত রয়েছে। সেগুলি হল মহিলা, যুবক, কৃষক ও গরিব অংশের মানুষ।এই চার শ্রেণীর মানুষ আত্মনির্ভর হলেই দেশ শক্তিশালী হবে।দেশের এই চার শ্রেণীর মানুষের প্রতি বিজেপি ভরসা রেখেছে। প্রতিটি গরিব অংশের মানুষ এটাকে নিজেদের জয় হিসেবে মনে করছেন।প্রতিটি নতুন ভোটার এবং অনগ্রসর অংশের মানুষ বিজেপির এই জয়ের মাধ্যমে উন্নত দেশ গড়তে চেয়েছেন।এ জয়ের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ করে মহিলাদের ধন্যবাদ জানান।মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, মহিলাদের জন্য যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী মোদির ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি।মহিলারা তাদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও সম্মানের জন্যই বিজেপিকে বিশ্বাস করেন।তিনি বলেন, এই ফলাফলে ভারতীয় জনতা পার্টি ত্রিপুরা প্রদেশ অত্যন্ত গর্ববোধ করছে।তাই ভারতীয় জনতা পার্টির ত্রিপুরা প্রদেশের পক্ষ থেকে এই চার রাজ্যের জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ফলাফলকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, কংগ্রেস সহ ইন্ডিয়া জোটকে জনগণ স্পষ্টভাবেই প্রত্যাখ্যান করেছে।তিন রাজ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির বিপুল জয়ে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে।এই ফলাফলকে সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করলে অনেক কিছুই স্পষ্ট হয়।ছত্তিশগড়ে ৯০ টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৪ টি কেন্দ্রে, রাজস্থানে ১৯৯ টির মধ্যে ১১৫ টি কেন্দ্রে, মধ্যপ্রদেশে ২৩০ টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৬৩ টি তে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থীগণ জয়ী হয়েছেন।শতাংশের হারে ছত্তিশগড়ে ৪৬.২৭ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে ৪৮.৫৫ শতাংশ রাজস্থানে ৪১.৬৯ শতাংশ এবং তেলেঙ্গানাতে বিজেপি ১৩.৯০ শতাংশের মতো জনসমর্থন পেয়েছে।তার বিপরীতে বিরোধী দলগুলোর ফলাফল যথেষ্ট হতাশাজনক। সবচেয়ে অদ্ভুত ফলাফল হয়েছে বাম দলগুলির। ছত্তিশগড়ে সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ০.০৪ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে ০.০১ শতাংশ, রাজস্থানে ০.৯ শতাংশ। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সিপিএম সহ বাম দলগুলি জনগণকে স্বপ্ন দেখায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি বঞ্চিত ব্যক্তি সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পে উপকৃত হচ্ছেন।সমাজের অন্তিম মানুষের কাছে সমস্ত ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের সুবিধাগুলো পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।এতে প্রান্তিক জনপদের অন্তিম ব্যক্তিও সরকারী প্রকল্প ও পরিষেবার সুযোগ পাচ্ছেন।তিনি বলেন, দেশের যুবাশক্তি উন্নয়ন চায়।নিয়োগ দুর্নীতিতে যুব সম্প্রদায়ের অসন্তোষ ছত্তিশগড়ে, তেলেঙ্গানা এবং রাজস্থানে প্রভাবিত হয়েছে।অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের স্কিল ইন্ডিয়া ও মেক ইন ইন্ডিয়ার মতো সিদ্ধান্ত দেশের যুবাদের স্বনির্ভর হতে অনুপ্রাণিত করছে।এদিন এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভোটের আগে দল বদল করা নেতাদের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম ঠিক নেই।পাঁচ বছর পর তারা ভোটের প্রাকমুহূর্তে স্থির করেন কোন দিকে যাবেন। তিন রাজ্যের ফলাফলের পর এখন তারা এদিক সেদিক যাবে না বলেও মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তিপ্রা মথা দল ফ্যাক্টর হবে না।বিধানসভার উপনির্বাচনেও বিষয়টির প্রমাণ মিলেছে। সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, নরেন্দ্র মোদির বিকল্প কেউই হতে পারে না। তিন রাজ্যের ভোটের ফলাফলে ইন্ডিয়া জোটের রাস্তা পরিষ্কার হয়ে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ সুনিত সরকারও ছিলেন।