বিগত সরকারের দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে আনলেন অর্থমন্ত্রী!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে এই সময়ে কুড়ি হাজার শিক্ষক কর্মচারী অবসরে চলে গেছেন। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরে চৌদ্দ হাজার পদে লোক নিয়োগ করা হয়েছে।
পাইপলাইনে আছে আরও ষোল হাজার। এই পদগুলিতেও খুব শীঘ্রই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। নিয়োগ করার ক্ষেত্রে অর্থ দপ্তরের কোনও সমস্যা নেই। চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার যে নীতি গ্রহণ করেছিল, সেই গাইডলাইন মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। এতে কিছু সময় বেশি লাগছে ঠিকই। কিন্তু রাজ্য সরকার স্বচ্ছতার সাথে এই কাজটি করছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার। বুধবার বিধানসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই কথাগুলি বলেন, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়। এর আগে এদিন বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়ের উত্থাপিত রাজ্যের অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করা সম্পর্কিত একটি প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী শ্রী রায় বিগত বামফ্রন্ট সরকারের চরম দ্বিচারিতায় এবং অসত্য প্রচারের পর্দা ফাঁস করেন। এদিন কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল রায় জানতে চান, রাজ্যে বর্তমানে রাজ্য সরকারের অনিয়মিত কর্মচারীর সংখ্যা কত? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থ দপ্তর একটি বিশেষ পোর্টালের মাধ্যমে অনিয়মিত কর্মচারীদের তথ্য সংগ্রহ করেছে। উক্ত পোর্টালের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য অনুসারে মোট অনিয়মিত কর্মচারীর সংখ্যা হচ্ছে ১৪৪৫ জন। এরমধ্যে ডিআরডব্লিউ ৮৩৬, কন্টিজেন্ট ওয়ার্কার ৩১১, ক্যাজুয়েল ওয়ার্কার ১৯৩ এবং পার্টটাইম ওয়ার্কার ১০৫ জন। বিধায়ক গোপাল রায়ের দ্বিতীয় প্রশ্নটি ছিল, অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের কোনও পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের রয়েছে কিনা? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে রাজ্য সরকারের প্রচলিত নতুন রিক্রুটমেন্ট পলিসির সাথে সামঞ্জস্যতার কথা মাথায় রেখে অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রীর এই জবাবে খুশি হননি বিরোধী দলের বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়। তিনি অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য এবং অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। গোপাল বাবুর দাবি রাজ্যে ত্রিশ হাজারের উপরে অনিয়মিত কর্মচারী রয়েছে। তারা কাজ করেও উপযুক্ত মজুরি পাচ্ছে না। বিগত বামফ্রন্ট – সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, অনিয়মিতদের দশ বছর কাজ করলেই তাদের নিয়মিত করার। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করা হয়েছে। উল্টো বর্তমান সরকার ২০১৮ সালে কর্মচারী বিরোধী সার্কুলার বের করেছে। গোপালবাবু বলেন, সুপ্রিম কোর্টও নির্দেশ দিয়েছেন দশ বছর চাকরি – করলে তাদের নিয়মিত করতে হবে। গোপালবাবু আরও বলেন, যারা অনিয়মিত পদে থেকে কাজ করে অবসরে চলে গেছেন, তাদের এককালীন দশ লক্ষ টাকা – দেওয়ার দাবি জানান।
কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল রায়ের এই বক্তব্যের পর অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় -এই সম্পর্কিত আরও তথ্য উত্থাপন করে বলেন, অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার সর্বপ্রথম একটি পলিসি অনুসারে DRW/Casual/Contigent Worker – দের নিয়মিতকরণের সিদ্ধান্ত নেয়। এই পলিসি অনুসারে যারা Full Time Basis- এ নিযুক্তি পায় এবং ৩১.০৩.২০০৫ পর্যন্ত ১৭ বছর পূর্ণ করেছিল, তাদের নিয়মিত করার। মেমো নং-১০ (২)-ফিন (জি)/২০০৫ তারিখ ০৪/০৩/২০০৬-তে – বিশদভাবে বলা হয়েছে।
এরপর, তৎকালীন সরকার আরেকটি সিদ্ধান্ত নেয়, যা ৩১.০৩.২০০৬ তারিখ পর্যন্ত যারা ১৫ বছর পূর্ণ করেছিল তাদেরকেও নিয়মিত করার। মেমো নং ১০(২)- ফিন (জি)/২০০৫, ২২/০২/২০০৭-তে তা বিশদভাবে বলা হয়েছে। তৎকালীন সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে, মেমো নং-১০ (২)-ফিন (জি)/২০০৮ (পার্ট), ২১/০১/২০০৯ মূলে বলা হয়েছিল, যে সকল অনিয়মিত কর্মচারীরা ৩১/০৩/২০০৩ পর্যন্ত চাকরিতে নিযুক্তি পেয়েছেন এবং যারা দশ বছর চাকরি করেছেন, তাদেরকে নিয়মিত করা হবে।
এরপর, তৎকালীন সরকার আরেকটি সিদ্ধান্ত নেয়, যা ৩১.০৩.২০০৬ তারিখ পর্যন্ত যারা ১৫ বছর পূর্ণ করেছিল তাদেরকেও নিয়মিত করার। মেমো নং ১০(২)- ফিন (জি)/২০০৫, ২২/০২/২০০৭-তে তা বিশদভাবে বলা হয়েছে। তৎকালীন সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে, মেমো নং-১০(২)-ফিন (জি)/২০০৮ (পার্ট), ২১/০১/২০০৯ মূলে বলা হয়েছিল, যে সকল অনিয়মিত কর্মচারীরা ৩১/০৩/২০০৩ পর্যন্ত চাকরিতে নিযুক্তি পেয়েছেন এবং যারা দশ বছর চাকরি করেছেন, তাদেরকে নিয়মিত করা হবে।।
অতএব, যারাই ৩১/০৩/২০০৩ পর্যন্ত নিযুক্তি পেয়েছিল, ২০১৩ সালের মধ্যে
ঐ সমস্ত অনিয়মিত কর্মচারীদের দশ বছর পূর্ণ হওয়ার কথা। তৎকালীন সরকার ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন ছিল এবং তৎকালীন সরকারের আদেশ অনুসারে সমস্ত অনিয়মিত কর্মচারী নিয়মিত হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বিগত বাম সরকার সেটা করেনি। উক্ত আদেশে এটাও উল্লেখ করা ছিল যে ৩১/০৩/২০০৩ তারিখের পর অর্থ দপ্তরের অনুমোদনহীন চাকরিতে নিযুক্ত সমস্ত অনিয়মিত কর্মচারীদের ছাঁটাই করা হবে। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, উক্ত মেমো (নং১০(২)-ফিন (জি)/ ২০০৮ (পার্ট), তারিখ ২১/০১/২০০৯তে এটাও লেখা ছিল যে, এরপর কোনও ধরনের অনিয়মিত কর্মচারী নিয়োগ হলে, যে সকল আধিকারিক ঐ সকল অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়োগ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মেমো নং-১০(২)-ফিন (জি)/২০০৮ (পার্ট) তারিখ ৩১/০৭/২০১৮ইং মূলে তৎকালীন সরকারের দেওয়া মেমো বাস্তবায়ন করলে সব অনিয়মিত কর্মচারীদের ছাঁটাই করতে হতো। আমরা সরকারে এসে অনিয়মিত কর্মচারীদের যাতে ছাঁটাই করতে না হয়, তার জন্য ঐ সকল মেমো খারিজ করেছি। উপরন্তু সময়ে সময়ে অনিয়মিত কর্মচারীদের বেতন ভাতাও বৃদ্ধি করেছি। অনিয়মিত কর্মচারীদের ব্যাপারে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি এবং একটি বিশেষ পোর্টালের মাধ্যমে অনিয়মিত কর্মচারীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

Dainik Digital

Recent Posts

ইন্ডিগো ফ্লাইটে বোমার হুমকি!! কলকাতা বিমানবন্দর হাই অ্যালার্ট!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উচ্চ সতর্কতা জারি করা…

3 hours ago

আওয়ামী লীগের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গেজেট নোটিফিকেশন দিয়ে আওয়ামী লীগের সবরকম কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসন…

4 hours ago

অবসর নিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সুপ্রিম কোর্টের ব্যাটন তুলে দিয়ে গেলেন বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের হাতে। বুধবার ১৪…

6 hours ago

সিঁদুর’ প্রসঙ্গে বিজেপির ১০ দিনের ‘তিরঙ্গা যাত্রা’!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে প্রচারে নামতে চলেছে বিজেপি।পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ায় ভারতীয় সেনা বাহিনীকে ধন্যবাদ…

6 hours ago

পুরনো ছন্দে ফিরছে উপত্যকা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে শ্রীনগর। শ্রীনগর বিমানবন্দরও মঙ্গলবার খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তা ঘাটে স্বাভাবিক…

6 hours ago

পঞ্জাবের বায়ুসেনাঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে সামরিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা প্রশমনের পর মঙ্গলবার…

8 hours ago