অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের সুস্থ সংস্কৃতির পীঠস্থান রবীন্দ্র ভবনের পাশে বারের অনুমোদন ঘিরে এমন ল্যাজেগোবরে রাজ্য সরকার। রাজ্যজুড়ে প্রবল সমালোচনার চাপে মুখ বাঁচাতে এখন বারের মালিককে শোকজ করেছে পশ্চিম জেলার এক্সাইস সুপার। অভিযোগ, জনগণের ক্ষোভএবং নজর ঘোরাতেই দপ্তর এই পথে হাঁটছে। প্রশ্ন উঠেছে, যারা রাজ্যের সংস্কৃতির পীঠস্থানে বার খোলার এবং বেলাল্লাপনা করার অনুমোদন দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে কে? সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী, দপ্তরের সচিব তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে কে? প্রশ্ন উঠেছে, আগরতলা পুর নিগম কীভাবে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করেছে? কে এর তদন্ত করবে? কীভাবে দমকলের অনুমোদন মিলেছে? তদন্ত করবে কে? বুধবার অর্থমন্ত্রী নিজে বলেছেন, দুই বছর আগে ইউডি ভবনের উপরের তলায় রেস্তোরাঁ এবং বার খোলার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিলো। অর্থাৎ আবেদন জানানো হয়েছিলো। জেলাশাসক এজন্য আগে তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, জেলাশাসক তো আজ্ঞাবহ কর্মচারী। তিনি রিপোর্ট দিয়েছেন বলেই অনুমোদন দিতে হবে, এমন আইন বা শর্ত কোথায় উল্লেখ আছে? এখন জেলাশাসকের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
যে এলাকায় মদের দোকানই খোলা যায় না, সেখানে অর্থ দপ্তর বার খোলার অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে! আর সেই লাইসেন্স পেয়ে বার কর্তৃপক্ষ সেখানে বেআইনিভাবে নাইট ক্লাব খুলে বসেছে। জনগণের ক্ষোভকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে এখন অন্যের কাঁধে বন্দুক রাখার চেষ্টা হচ্ছে।
খবরে প্রকাশ,২০২১ সালেই এই আবেদন এসেছিলো। এতোদিন সেই আবেদন চাপাই পড়ে ছিলো। প্রশ্ন হচ্ছে, হঠাৎ করে কি এমন ব্যাপার ঘটে গেলো যে রাজ্যের সংস্কৃতির অঙ্গনকে কলঙ্কিত করতে এমন একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো? এই চরম ঘৃণ্য কাজটি যে বা যারা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে না কেন? ইউডি দপ্তর মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের মাথার উপরে বার খোলার অনুমতি কে দিলো? এর তদন্ত কে করবে? শর্ত ভঙ্গ করে রাত এগারোটার পরেও বার খোলা রাখার জন্য যদি বারের মালিককে তিনদিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা যায়, তাহলে যে বা যারা রাজ্যের সুস্থ সংস্কৃতির অঙ্গনকে কলুষিত করেছে বারের লাইসেন্স প্রদান করে, তাদের বিরুদ্ধে কেন তদন্ত হবে না? কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? কিসের বিনিময়ে, কোন্ স্বার্থে এমন একটি ঘৃণ্য কাজ সম্পাদন হলো? রাজ্যবাসী তা জানতে চায়।
মন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, যদি আবেদনের ভিত্তিতেই সব কিছু হয়, তাহলে রাজ্যবাসীও জানতে চায় মহাকরণে, বিধানসভায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অঙ্গনে বার খোলার আবেদন করলে সেই আবেদনও তাহলে মঞ্জুর হবে কিনা? খবরে আরও প্রকাশ, একেবারে জলের দরে এই বিল্ডিং ভাড়া দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী তো বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী নাকি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যবাসী জানতে চায়, কিসের তদন্ত? কে বা কাদের বিরুদ্ধে তদন্ত? অর্থমন্ত্রী কিন্তু তা স্পষ্ট করেননি। গত সাড়ে সাত বছরে চিটফান্ডে প্রতারিত রাজ্যের জনগণ এক টাকাও ফেরত পায়নি, অথচ চিটফান্ডের তৈরি বিল্ডিং অধিগ্রহণ করে (যদিও অভিযোগ দখলের) রাজ্য সরকার সেই বিল্ডিংয়ে সরকারী অফিস খুলেছে। আর সেই বিল্ডিং-এর একটি অংশ ভাড়া দেওয়া হলো বার খোলার জন্য! বারের সাথে বেআইনিভাবে যুক্ত হয়ে গেলো নাইট ক্লাব! অথচ প্রশাসন, সরকার কিছুই জানে না? রাজ্যের জনগণ এতো বোকা নয়। জনগণ সব বোঝে। আর বোঝে বলেই পঁচিশ বছরের বাম শাসনের দুর্গও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি।