প্রশ্নের মুখে দপ্তরের ভূমিকা,ঘোষণার ৬ মাস পরও দেখা নেই নয়া ট্রেনের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- দেশের রেলমন্ত্রীর ঘোষণার প্রায় ছয় মাস পরও চালু করা হলো না বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন। কবে চালু হবে সেই সম্পর্কে নিশ্চিত নয় স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষ। নিশ্চিত নয় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলসূত্রও। তবে রেলের একটি বিশেষ সূত্রের খবর এই ট্রেনটির পরিকল্পনা চলছে। এই ট্রেন চলাচল শুরু করতে প্রয়োজনীয় কোচ তথা রেলের পরিভাষায় রেক, ইঞ্জিন ইত্যাদি ব্যবস্থা কী করে করা যায় তার জন্য খোঁজ খবর চলছে। শুরু হয়েছে উদ্যোগ। কখনো সাপ্তাহিক এই একজোড়া দূরপাল্লার বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করা সব দিক থেকে সুবিধাজনকক হবে তা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। এর জন্য ছয় মাস লাগতে পারে পারে কি না তার জবাব অবশ্য নেই রেল সূত্রের কাছে। গত এপ্রিল- মে মাসের দিকে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনের সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব দেশের রেলমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার বৈষবের কাছে শ্রীদেব রাজ্যের রেল যাত্রীদের নানা অসুবিধা দূর করার কথা বলেন। একই সময়ে আগরতলা-গুয়াহাটি- আগরতলার মধ্যে একজোড়া এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর দাবি জানান। এর ভিত্তিতে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার বৈষ্ণব এই বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন বিপ্লব কুমার দেবকে। এর কিছু দিন পর গুয়াহাটির কাছের একটি স্টেশনের সঙ্গে সাপ্তাহিক বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে আগরতলার সংযোগ স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। রেলমন্ত্রীর তরফে ঘোষণা দেওয়া হয় নারিঙ্গি- আগরতলা- নারিঙ্গির মধ্যে বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করবে বলে। এরপর কেটে গেছে প্রায় ছয় মাস। রেলমন্ত্রীর ঘোষণা মোতাবেক দূর পাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনটির চলাচল শুরু হয়নি। এই বিষয়ে নতুন করে নেই কোনও ঘোষণা। নারিঙ্গি রেল স্টেশনটি আগরতলা অথবা লামডিঙের দিক থেকে গুয়াহাটি স্টেশনের আগে অবস্থিত। গুয়াহাটির পর রয়েছে নিউ গুয়াহাটি রেল স্টেশন। তারপরই রয়েছে নারিঙ্গি স্টেশন। গুয়াহাটি ও নারিঙ্গির মাঝখানে থাকা নিউ গুয়াহাটি স্টেশনের সঙ্গে যাত্রীদের কোনও ধরনের সম্পর্ক নেই। এই স্টেশনে যাত্রী অথবা মালবাহী কোনও ট্রেন থামে না। স্টেশনটি ব্যবহার করা হয় শুধুমাত্র রেলের নিজস্ব প্রয়োজনে। গুয়াহাটি স্টেশনের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী বিভিন্ন ট্রেন নিউ গুয়াহাটি স্টেশনে সাফাই ও সারাই করা হয়। যাত্রী অথবা মালবাহী ট্রেনের সংস্তার এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে ব্যবহার করা হয় স্টেশনটি। সেই দিকে থেকে গুয়াহাটি স্টেশনের স্টেশনের সবচেয়ে কাছের স্টেশন আগরতলার দিকে নারিঙ্গি ও নিই জলপাইগুড়ির দিকে মালিগাঁও। গুয়াহাটি থেকে রেলপথে মালিগাঁও স্টেশনের দূরত্বে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। সড়ক পথের দূরত্বও প্রায় একই রকম। গুয়াহাটি স্টেশন থেকে রেল পথে নারিঙ্গি স্টেশনের দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। সড়ক পথের দূরত্ব দ্বিগুণের বেশি, প্রায় সতেরো কিলোমিটার। আসলে গুয়াহাটি মহানগরের প্রাণকেন্দ্র পানবাজার ও পল্টনবাজারের মাঝখানে গুয়াহাটি স্টেশনের অবস্থান। মালিগাঁও স্টেশনও গুয়াহাটি মহানগরের মূল এলাকায় অবস্থিত। নারিঙ্গি স্টেশনটি কিন্তু মূল গুয়াহাটি থেকে অনেকটা বাইরে রয়েছে এই স্টেশনে যাতায়াত করা যাত্রীদের পক্ষে যথেষ্ট মুশকিল হয়ে দাঁড়াতে পারে। ফলে আগরতলার সঙ্গে গুয়াহাটি স্টেশনের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু করা সম্ভব না হলে
মালিগাঁওয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হোক ট্রেনটি। যাত্রী স্বার্থে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে গুয়াহাটি স্টেশনের উপর মাত্রা চাপ রয়েছে। এই চাপ কাটাতে দূর ছাড়া পাল্লার বহু এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে মালিগাঁও পর্যন্ত। ঘোষিত অথবা প্রস্তাবিত ট্রেনটিও মালিগাঁওয়ের সঙ্গে যুক্ত হলে সব দিক থেকে সুবিধাজনক হতে পারে। এই বিষয়ে রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের তরফে তদারকি করা দরকার। তবে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর এই বিষয়ে প্রায় বেখবর বলে জানা গেছে। রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের দায়সারা গোছের মনোভাবের কারণে নানা দিক থেকে রাজ্যের রেলযাত্রীরা ভোগান্তির মুখে পড়েন বলে খবর। পরিবহণ দপ্তরের তরফে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত সংযোগ রক্ষা করা হলে নানা সমস্যা লাঘব হতো। মিটতে পারে নারিঙ্গির বদলে মালিগাঁও পর্যন্ত উল্লেখিত বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের দাবি।

Dainik Digital: