প্রদ্যোতের দ্বিচারিতায় বিভ্রান্ত জনজাতির মানুষ : জিতেন!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)
FacebookFacebookTwitterTwitterRedditRedditLinkedinLinkedinPinterestPinterestMeWeMeWeMixMixWhatsappWhatsapp

বিজেপির জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সরাসরি নীরব দর্শক। কিন্তু আবার জনজাতি জনগণের ঐক্যবদ্ধ এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বৃত্তের বাইরে গিয়ে শুধুমাত্র কোন একটি জনগোষ্ঠীর একক আন্দোলন অব্যাহত আছে। যা আসল উদ্দেশ্যকেই বিধেয় করছে। অন্যদিকে, এই আন্দোলন পরোক্ষে আরএসএস-বিজেপির হাতকেই শক্ত করছে। রাজ্যের জনগণের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে সম্পন্ন হওয়া নির্বাচনে লাভবান হয়েছে বিজেপি। তবে এ ধরনের হটকারী আন্দোলনকে বামেরা কোন ভাবেই সমর্থন করে না। রবিবার ঠিক এভাবেই ইন্টারলোকিয়েটর নিয়োগ নিয়ে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের সন্তোষ প্রকাশের প্রশ্নে প্রতিক্রিয়া দিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে গ্রেটার তিপ্রা ল্যান্ড, সাংবিধানিক অধিকার, লিখিত প্রতিশ্রুতি। আর এখন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর মাত্র মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ বার্তাতেই বাজি পোড়ানো হচ্ছে। এর আগে মোডালিটি কমিটি নিয়েও এসব চলেছে। রাজ্যের উপজাতি জনসমাজের আবেগ নিয়ে খেলা চলছে। এতে লাভবান হচ্ছে শাসক বিজেপি। তবে রাজ্যের মানুষ এখন সব বুঝে গিয়েছেন। শুধু সময়ের অপেক্ষামাত্র। উপযুক্ত জবাব দেবেন রাজ্যবাসী। জিতেন চৌধুরীর দাবি ১৯৭৮ সালে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার আগে জনজাতি অন্যষিত এলাকাগুলিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিশুদ্ধ পানীয় জল, রাস্তাঘাট এবং বিদ্যুৎ ইত্যাদির কোন অস্তিত্বই ছিল না। ককবরক ভাষা, গড়িয়া, মামিতা, হজাগিরি, লেবাং, বুমানি রাই বালমানি জাদু কলিজা, ওয়াংলা, বিজু, সাংরেং এবং চের ইত্যাদি ছিল অনাদৃত, অবহেলিত এবং অপরিচিত। ১৯৫০ সালে দেশে সংবিধান গৃহীত হবার পর জনজাতিদের জন্য শিক্ষা এবং চাকরিতে সংরক্ষণ চালু হলেও রাজ্যে তা ছিল অকার্যকর। ১৯৪৯ সালে ভারত সরকারের সাথে তদানীন্তন রিজেন্ট মহারাণীর সই করা চুক্তিপত্র (Merger Agreement) অনুযায়ী জনজাতিদের জন্য জমির রিজার্ভ (Tribal Reserve) ঘোষণা হলেও সেটাকে কলাপাতার সমানও মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তিনি জানান, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও সারা দেশের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যের জনজাতিরাও সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে তুলনামূলক ভাবে অন্যান্যদের চাইতে পিছিয়ে আছে— এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। মূল কারণ রাজনৈতিক এবং সর্বকালে এর পেছনে কাজ করেছে শাসকবর্গের পরিচালন নীতি। এটা চলে এসেছে ১৯৪৯ সালে ত্রিপুরা রাজ্যের ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যোগদানের আগে থেকেই।
জিতেনবাবুর দাবি বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এসে ককবরক ভাষাকে রাজ্যের সরকারী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিল। আজ তা বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। জনজাতিরা তাদের বেআইনি ভাবে হস্তান্তরিত জমি ফেরত পেয়েছে। জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় বিদ্যালয়, কলেজ, আইটিআই, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানীয় জল, সেচ, অফিস-কাছারি, বাজার এবং অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে উঠা শুরু হয়। সন্ত্রাসবাদী দৗরাত্ম্য না। থাকলে এই পরিকাঠামোর বহর আরও ব্যাপক হতো। সরকারী চাকরিতে একশ পয়েন্ট রোস্টার মেনে নিয়োগ চালু হয়। দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল সংবধিানের ষষ্ঠ তপশিল অনুসারে খুমুলুংয়ে স্বশাসিত জেলা পরিষদ যাত্রা শুরু করে। বন অধিকার আইনে ত্রিপুরা রাজ্যেই জনজাতিরা সর্বাধিক পাট্টা পেয়েছে। এগুলি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ফসল। জনজাতি-জাতি সকল অংশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের হাত ধরেই এই বিরাট সাফল্য এসেছে, কোন একটা জাতি বা সম্প্রদায়ভিত্তিক আন্দোলনের হাত ধরে নয়। তার অভিযোগ আরএসএস-বিজেপি এ দেশে জনজাতিদের ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, চিরাচরিত ধর্ম এবং সাংবিধানিক অধিকারকে স্বীকারই করে না। বন অধিকার আইনকে ঠুটো জগন্নাথে পরিণত করে হাজার হাজার জনজাতি পরিবারকে উচ্ছেদ করছে। চাকরি পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি থাকার পরেও এডিসির ক্ষমতায়ন এবং ককবরককে সংবিধানের অষ্টম তপশিলে অন্তর্ভুক্তির কোন উদ্যোগ নেই। ১২৫তম সংবিধান সংশোধন করে এডিসিকে তার প্রাপ্য অর্থ বরাদ্ধ করছে না। এ ক্ষেত্রে নামধারী উপজাতি জনদরদিরা নীরব দর্শক। তিনি জানান, কিছু সংগঠন ও ব্যক্তি জনজাতিদের সার্বিক বিকাশ এবং অস্তিত্বরক্ষার কথা বলেন— এই প্রশ্নে আমাদের কোন বিরোধ নেই। কিন্তু সমাধানের প্রশ্নে তাঁরা যে রাস্তা বা উপায়ের কথা বলেন সেটার সাথে আমরা সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করছি। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাজনীতিই যেখানে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে সেখানে রাজনৈতিক লড়াইয়ের বাইরে গিয়ে জাতি বা জনগোষ্ঠীভিত্তিক ভুল রাজনীতি এবং কোন আন্দোলন মূল সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। উল্টো লাভবান হবে শাসক গোষ্ঠী। ২০১৭ সাল থেকে রাজ্যে এসবই চলছে। প্রত্যেক ২০ বছর অন্তর অন্তর রাজ্যে তা অব্যাহত । তবে রাজ্যে শান্তি সম্প্রীতি ঐক্য রক্ষায় রাজ্যবাসীকে এগিয়ে আসার তিনি আহ্বান জানান ৷

FacebookFacebookTwitterTwitterRedditRedditLinkedinLinkedinPinterestPinterestMeWeMeWeMixMixWhatsappWhatsapp
Dainik Digital

Recent Posts

ইণ্ডিগো বিমানে পড়ল বাজ, ভাঙল সামনের অংশ, শ্রীনগরে জরুরি অবতরণ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে শ্রীনগর ভায়া দিল্লিগামী বিমান। সন্ধে থেকেই বজ্রপাত ও প্রবল…

9 hours ago

ছত্রিশগড়ে নিরাপত্তাবাহিনীর সাথে জঙ্গির লড়াইয়ে খতম ২৭ মাওবাদী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বুধবার সকালে অবুঝমাঢ়ে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে কমপক্ষে ২৭ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে…

17 hours ago

পাকিস্তানে স্কুল বাসে আত্মঘাতী বোমা হামলা, মৃত ৪শিশু আহত ৩৮!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বালুচিস্তানে স্কুল বাসে আত্মঘাতী বোমা হামলা ৷ ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে চার শিশুর ৷…

18 hours ago

কলকাতার আকাশে একঝাঁক ড্রোন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- কলকাতার আকাশে একঝাঁক রহস্যময় ড্রোন। ঘটনাটি ঘটে সোমবার। অন্তত আট থেকে দশটি…

19 hours ago

ফের ধ্বসে বিপর্যস্ত উত্তর সিকিম!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-টানা বৃষ্টির কারণে ধ্বস নামে উত্তর সিকিমে ।এর জেরে বন্ধ লাচেন এবং লাচুংয়ের…

20 hours ago

টাটা গ্রুপের সাথে লিজ এগ্রিমেন্ট,কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে পুষ্পবন্ত প্যালেস : মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-পুষ্পবন্ত প্যালেসে পাঁচতারা হোটেল নির্মাণ নিয়ে বহু জল্পনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বলেছিলেন, হোটেল…

20 hours ago