এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও।অর্থাৎ কন্যাসন্তানকে বাঁচাও এবং তাদের উন্নতির জন্য তাদেরকে পড়াশোনার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা করে দেওয়া।এ ধরনের একটি প্রকল্পের সূচনা করেছিলো ২০১৫ সালে মোদি সরকার। উদ্দেশ্য ছিল লিঙ্গবৈষম্য দূর করা, মেয়েদের প্রাধান্য দেওয়া, তাদের ক্ষমতায়ন করা ইত্যাদি ইত্যাদি।দশ বছর পর এই প্রকল্পের সাফল্য হিসাবে যদি দেখা যায় তাহলে দেখা যাবে যে,এই প্রকল্পে বিগত কয়েক বছরের বেশি সময় ধরে অর্ধেকের বেশি টাকা খরচ হয়েছে শুধু বিজ্ঞাপনে।এই সমস্ত বিজ্ঞাপনে শুধু প্রধানমন্ত্রীর ঢাউস ঢাউস ছবি ছাপা হয়েছে।আদতে কাজের কাজ হয়েছে কি?২০১৫ সালের ২২ জানুয়ারী এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।হরিয়ানার পানিপথে। নারী কল্যাণ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় প্রথমে ভাবা গেছিল সত্যি সত্যিই হয়তো নারীদের উন্নয়নে, কন্যাসন্তানের যথাযথ দেখভালে ব্যাপক গুরুত্বারোপ করা হবে।আদতে গত দশ বছরে এই প্রকল্পে শুধু বিজ্ঞাপন, প্রচার আর টাকার আদ্যশ্রাদ্ধ ছাড়া সাফল্য বলতে তেমন কিছু নেই। নারীদের উপর নির্যাতন, ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ নেই।
গত কয়েক বছর আগে বিজেপি সাংসদ হেনা গাভিটের নেতৃত্বাধীন একটি সংসদীয় কমিটি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিলো যে, ২০১৬-২০১৯ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৪৪৬ কোটিরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে প্রায় আশি শথাংশ অর্থই ব্যয় করা হয়েছে বিজ্ঞাপন বাবদ। এবং এতেও সিংহভাগ বিজ্ঞাপনেই শুধু প্রধানমন্ত্রীর ছবি। এতে কি কাজের কাজ কিছু হচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন, মেয়েদের শিক্ষা সহ নানা স্কিমে তাদের সুবিধা প্রদান ইত্যাদি নিয়ে শুধু আত্মপ্রচারই সার। লম্বা চওড়া ভাষণবাজি হচ্ছে, হয়েছে।
অথচ এই দেশে এখনও ঘন্টায় নারী নির্যাতনের ঘটনা হচ্ছে ৪৩টি।প্রতিদিন আবার শিশু, পিছিয়ে পড়া, দলিতদের উপর নির্যাতনের ঘটনা হচ্ছে ২২টির মতো।হাতরস, উন্নাও, কাটোয়া সর্বশেষ মণিপুর ঘটনার তালিকা ক্রমেই লম্বা হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, সম্প্রতি এক তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে যে, বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্পে অর্ধেক টাকার কোনও হিসাবই নেই। সম্প্রতি এই ধরনের আর্থিক অনিয়মের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বিরোধীরা এ নিয়ে ফের গাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে মোদি সরকারকে।
শুধুমাত্র স্টান্টবাজি, প্রচারসর্বস্ব এই সমস্ত প্রচারে আদতে কি মহিলাদের কোনও বিকাশ হচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্যে প্রকাশ যে, গত দশ বছরে বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্পে ৯৫২ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। রাজ্যে রাজ্যে এই টাকা গেছে, কেন্দ্রীয় স্তরেও এই টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে যে, এই বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেকের কোনও হিসাব নেই। বাকি টাকা কোথায় গেলো এই প্রকল্পের।
এই হচ্ছে নারী ক্ষমতায়নের অবস্থা দেশে। এছাড়া রাজ্যগুলিও যে অর্থ খরচ করেছে তাও অনেক কম। অনেক টাকা অব্যয়িত রয়ে গেছে। সুতরাং বলা যায়, বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্প আদৌ কি কোনও উপকারে লাগছে মহিলাদের। এই যদি হয় বেচি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পের বাস্তবায়নের নমুনা অতি সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে, প্রকল্পটি বর্তমানে কোন স্তরে রয়েছে এবং এর ভবিষ্যৎ কী? নারীদের ক্ষমতায়ন কোন দিশায় যাচ্ছে।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

পদ্মশ্রী প্রাপ্ত কৃষি বিজ্ঞান সুবান্না আয়াপ্পানের রহস্যমৃত্যু,!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত কৃষি বিজ্ঞানী ৬৯ বছর বয়সি সুবান্না আয়াপ্পান ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ…

8 hours ago

ব্যতিক্রমী সম্পর্কের খোঁজ!!

ছয় বৎসর পর পর ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘাতে ছয় জড়াইয়াছে। একটি যুদ্ধ কিংবা যুদ্ধ তৎপরতায় ময়দানে…

9 hours ago

রেশনে ডালের দাম বাড়ল পাঁচ টাকা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের রেশনশপে একলাফে মশুরি ডালের মূল্য প্রতিকিলোতে ৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার।রেশনশপে…

9 hours ago

টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিলেন কোহলি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিলো বিরাট কোহলি।ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অনুরোধ রাখলো না।রোহিত…

10 hours ago

সমাজিকমাধ্যমে বিদেশসচিব মিস্রীকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ নেটিজেনরা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বিদেশসচিব বিক্রম মিস্ত্রি। রবিবার সকাল থেকে…

10 hours ago

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ফের উচ্চস্তরীয় বৈঠক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রবিবার সকালে উচ্চস্তরীয় বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ এদিন তাঁর লোক কল্যাণ…

1 day ago