Categories: বিদেশ

দেড় লাখি ফুলদানি ৭৪ কোটিতে বিক্রি করে রাতারাতি ধনকুবের

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

‘ছিল রুমাল, হয়ে গেল বিড়াল’ কায়দায় বহু মানুষ রাতারাতি ধনী হন। তবে সেই পন্থা হল লটারিতে জ্যাকপট জেতা। এ ছাড়া কবে কে আর রাতারাতি ধনকুবের হয়েছেন! ডাকাতি করে ধনী হতে হলেও তার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। কিন্তু এ কাহিনির আলোচ্য চিনা যুবক যে ভাবে ধনকুবের হলেন, তাকে চমকপ্রদ বললেও কম বলা হয়। ওই যুবকের বাড়িতে একটি মহার্ঘ ফুলদানি ছিল। তাও সেটি তার নিজের কেনাও নয়, ঠাকুমার সূত্রে পাওয়া।
বাজারে সেটির দাম ছিল ভারতীয় মুদ্রায় দেড় লাখ টাকা। কিন্তু সেই ফুলদানিটি তিনি নিলামে তুলে বিক্রি করলেন ভারতীয় মুদ্রায় ৭৪ কোটি টাকায় !
সম্প্রতি নিজের বাড়িতে থাকা টিপিক্যাল চিনা স্টাইলের ফুলদানিটি নিলামে তোলেন ওই যুবক। প্রাথমিক দর রাখা হয়েছিল নিলামে ১,৫০০- ২,০০০ পাউন্ড (প্রায় ১.২১ – ১.৬১ লাখ টাকা) সেই ফুলদানির দাম যে এমন আকাশ স্পর্শ করতে পারে,. হয়তো তেমনটা তিনি দিবাস্বপ্নেও দেখেননি। কিন্তু সেটি নিলামে উঠতেই বিডারদের মধ্যে কার্যত যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সেটি বিক্রি হয় ৯১ লক্ষ পাউন্ডে।
ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৪ কোটি টাকারও বেশি। নীল-সাদা রঙের তিয়ানকিউপিং ফুলদানিটি গত ১ অক্টোবর, দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর দিন প্যারিসের ফন্টে-না ব্লু তে একটি অকশন হাউজ এটি নিলাম করে। শুরুতে এর দাম দেড় থেকে ২ লাখ টাকা রাখা হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনে প্ৰকাশ, কোম্পানির ওয়েবসাইট অনুসারে, নিলাম বস্তুর ফি-সহ ৯.১২১ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৭৪ কোটি টাকা) চূড়ান্ত মূল্যে সেটি একজন কিনে নেন। নীল এবং সাদা রঙের ফুলদানির দাম নিলামে বাস্তবিক দামের চেয়ে কয়েক হাজার গুণ বেশিতে বিক্রি হয়েছে। নিলাম হাউজের প্রধান জিন পিওরে ওসেনাট জানিয়েছেন, এই নিলাম থেকে তার জীবন বদলে যাবে। তিনি বলেন, ‘ফুলদানির মালিক বিদেশে থাকেন। তিনি নিজের ঠাকুরমার বাড়ি থেকে কিছু জিনিস নিয়ে এসেছিলেন, যার মধ্যে এই ফুলদানিটি ছিল। ফুলদানির মালিক এটি বিক্রি করে দিতে বলেন। সেই মতো আমরা এর জন্য এটি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিই।
ফুলদানিটি দেখতেও তেমন আহামরি কিছু নয়। তার অবয়ব গোলাকার এবং তার ‘গলা’ সরু ও লম্বা। তার গায়ে ড্রাগন এবং মেঘের নকশা করা রয়েছে। কেন দেড় লাখি ফুলদানি ৭৪ কোটি টাকায় বিক্রি হল ? নিলামদাতা সংস্থা জানিয়েছে, এটি তিয়ানকিউপিং ফুলদানি। আকৃতির কারণে এই ধরনের ফুলদানিকে স্বর্গীয় গোলক ফুলদানি বলা হয়। চিনারা মনে করেন, এই ফুলদানির মধ্যে দৈব শক্তি আছে।
ফুলদানি হলেও আদতে এটি মা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। এই লোকবিশ্বাস যে একেবারে ফেলনা নয়, নিলামের দর থেকেই তার কিছুটা আভাস পাওয়া গেছে। প্রথম কথা, ফুলদানিটি কিনতে ৩০০ থেকে ৪০০ লোক আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। যদিও তাদের মধ্যে মাত্র ৩০ জন এই নিলামে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। ফুলদানির মালিক নিজেও বিশ্বাস করতে পারেননি যে এই মামুলি ফুলদানি জন্য এত টাকা তিনি অর্জন করতে পারেন। বিডারদের দর হাঁকা দেখে অবাক হয়ে যান নিলামকর্তারাও। অকশন হাউজ জানিয়েছে যে, এই ফুলদানি বিংশ শতাব্দীর।
এটি ১৮ শতকের কারুকাজের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। যদিও এটি তেমন দুর্লভ নয়। পিওরে জানান, এটি কিনেছেন একজন চিনের বাসিন্দা। অকশন হাউজের বক্তব্য অনুযায়ী সম্প্রতি চিনে ঐতিহাসিক এবং প্রাচীন জিনিসপত্র কেনার বিষয়ে আগ্রহ দেখা গিয়েছে। এক শ্রেণির বিত্তবান সৌখিন চিনা নাগরিকদের ধারণা, অতীতে তাদের দেশের বহু শিল্পকলা চুরি হয়ে গিয়েছিল। সেগুলি তারা যথাসম্ভব ফেরত পেতে চান।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

ইন্ডিগো ফ্লাইটে বোমার হুমকি!! কলকাতা বিমানবন্দর হাই অ্যালার্ট!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উচ্চ সতর্কতা জারি করা…

7 hours ago

আওয়ামী লীগের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গেজেট নোটিফিকেশন দিয়ে আওয়ামী লীগের সবরকম কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসন…

8 hours ago

অবসর নিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সুপ্রিম কোর্টের ব্যাটন তুলে দিয়ে গেলেন বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের হাতে। বুধবার ১৪…

9 hours ago

সিঁদুর’ প্রসঙ্গে বিজেপির ১০ দিনের ‘তিরঙ্গা যাত্রা’!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে প্রচারে নামতে চলেছে বিজেপি।পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ায় ভারতীয় সেনা বাহিনীকে ধন্যবাদ…

10 hours ago

পুরনো ছন্দে ফিরছে উপত্যকা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে শ্রীনগর। শ্রীনগর বিমানবন্দরও মঙ্গলবার খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তা ঘাটে স্বাভাবিক…

10 hours ago

পঞ্জাবের বায়ুসেনাঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে সামরিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা প্রশমনের পর মঙ্গলবার…

11 hours ago