কয়েক মাস আগে দিল্লীতে বিধানসভা ভোটে আম আদমি পার্টিকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি।বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হন রেখা গুপ্তা।রেখা গুপ্তা কিছুদিন আগে সংবাদ শিরোনামে আসেন,তার জনতার দরবার চলাকালীন তিনি আক্রমণের শিকার হন। গুজরাট থেকে আসা এক ব্যক্তি তাকে জনতার দরবার চলাকালে আঘাত করেন। তার উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়। যদিও সামান্য আহত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা। এবার ফের সংবাদ শিরোনামে দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা। অন্য কারণে নয়, এবার তিনি সংবাদের পাদপ্রদীপে এসেছেন একটিই কারণে, তিনি সম্প্রতি দিল্লীর দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে একটি ফরমান জারি করেছেন। ফরমানটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঘিরে। সম্প্রতি অর্থাৎ গত ১৭ সেপ্টেম্বর দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৭৫তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। এই উপলক্ষে এবার সরকারী স্তরে এবং বিজেপি দলীয় স্তরে বেশ ঘটা করে মোদির জন্মদিন পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। কেননা, ৭৫তম জন্মদিন মোদির। কিন্তু দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা মোদির জন্মদিনের ভাবনাকে অন্যভাবে ভেবেছেন পালনের জন্য। তিনি দিল্লীতে সমস্ত দুর্গাপুজো কমিটির কাছে নির্দেশ পাঠান যে, এ বছর তারা যেন দুর্গা প্রতিমার পায়ের কাছে নরেন্দ্র মোদির ছবি রাখেন। এতে দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন যে, মোদিকে আশীর্বাদ করছেন দেবী দুর্গা। জন্মদিনে মোদির দীর্ঘায়ু কামনায় এটি তার অভিনব চিন্তা। যদিও মোদিময় ভারতে এখন ধর্ম আর রাজনীতি মিলেমিশে একাকার। অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি নিয়ে বিজেপির প্রচার, কিংবা কেদারনাথের গুহায় মোদির ধ্যান। কিংবা কন্যাকুমারীকায় প্রধানমন্ত্রীর ধ্যান-জপ সবই ধর্মকে রাজনীতির ময়দানে টেনে এনে প্রচার। এরই মধ্যে দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তাও পিছিয়ে থাকার পাত্রী নন। তিনিও নির্দেশ দিলেন দুর্গাপুজোর মণ্ডপে এবার নরেন্দ্র মোদির ছবি রাখতে হবে দেবী দুর্গার পায়ের কাছে। যদিও দিল্লীর পুজো উদ্যোক্তারা তা মানতে নারাজ। চিত্তরঞ্জন পার্কের অন্যতম বড় দুর্গাপুজো উদ্যোক্তারা সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন তারা চান না পুজোতে এই ধরনের ছবি ব্যবহার। ধর্মের সাথে রাজনীতিকে টেনে আনা সমীচীন নয় বলে তারা জানিয়ে দিয়েছেন। এরপরই দিল্লী বিজেপির তরফে জানানো হয় যে, এরকম কোনো নির্দেশ পালনের কথা বলা হয়নি। আসরে নামেন দিল্লীর প্রবাসী বাঙালি বিজেপির নেতারাও। তারাও দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের অসন্তোষকে চাপা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।নেতাদের বক্তব্য, কোনো লিখিত ফরমান দেওয়া হয়নি। মোদির জন্মদিনকে ঘিরে গোটা দেশে যে আবেগ তৈরি মৌখিকভারে পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে তার আবেদন জানিয়েছিলেন।কিন্তু সেটা কোনোভাবেই
নির্দেশ ছিল না।
কথা হল, দুর্গাপুজোয় মোদির ছবি থাকবে কেন? এখানে লক্ষ কোটি মানুষের ভাবাবেগ জড়িত। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে এভাবে প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কোনো রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর ছবি ব্যবহার করা কি আদৌ উচিত? বিজেপি আর কত ধর্মের দলীয়করণ করবে? প্রশ্ন সাধারণ জনগণের।শেষ পর্যন্ত দুর্গাপুজোকেও বাদ দিচ্ছে না কেন্দ্রের শাসক!