অনলাইন প্রতিনিধি :-ডেঙ্গু একটি মারণ রোগ এবং ভাইরাসজনিত রোগ।এডিস ইজিপ্ট জাতীয় স্ত্রী মশা এ রোগের বাহক ও বিস্তারক।এই এডিস ইজিপ্টের স্ত্রী মশা যখন কোনও ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামরায় ও রক্ত শোষণ
করে ডেঙ্গু ভাইরাস তখন রক্তের মাধ্যমে মশাতে প্রবেশ করে।এই মশা যখন অপর কোনও সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায় তার ৪-৭ দিনের মধ্যে ওই ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে। একটি ডেঙ্গু জীবাণু বাহিত মশার দ্বারা বহু ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারে। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা এই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সারা বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন জনসংখ্যা আক্রান্ত হয়। প্রায় ৪০ হাজার রোগীরও মৃত্যু হয়। বর্ষার শুরুতে বা শেষে এই রোগের প্রকোপ বাড়ে এবং আক্রান্তের সংখ্যাও অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যায়। ছোটো ছোটো পাত্রে বর্ষার জমা জলে এই মশা ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে। যে সমস্ত রোগীর একাধিকবার ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়, তারা মারাত্মকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে। ডেঙ্গুর লক্ষণ সমূহের মধ্যে উচ্চ তাপমাত্রা বা অতিরিক্ত জ্বর, তাপমাত্রা প্রায় ১০৪ ডিগ্রি থেকে ১০৬ ডিগ্রি পর্যন্ত হয়। সঙ্গে তীব্র মাথাব্যথা, চোখের পিছন দিকে ব্যথা, সমস্ত শরীরের মাংসপেশী, হাড় ও বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা, পিট ব্যথা, কোমরব্যথা, ক্ষুধামন্দা, বমি ভাব বা বমি, পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি লক্ষণগুলো দেখা যায়। Hemorrhagic ডেঙ্গুতে কান, নাক, চোখ, মুখ, মাড়ি ইত্যাদি স্থানে রক্তপাত দেখা যায়। এটি অনেক সময় মারাত্মক ও প্রাণঘাতী। এতে রক্ত কণিকা প্লেটলেটের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে যায়, মাল্টি অর্গান ফেলিয়ার হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হতে পারে।
এবার আলোচ্য বিষয় ডেঙ্গু জ্বরে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা-হোমিওপ্যাথিক ওষুধ ডেঙ্গু জ্বরে অত্যন্ত কার্যকরী ও ফলপ্রদ। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রথম অবস্থা থেকে ব্যবহার করা যায় এবং ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং রোগীকে সম্পর্ণ সুস্থ রাখা যায়।হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সম্পূর্ণ নিরাপদ ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন এবং খুব সহজেই প্রয়োগ করা যায়।Eupetorium পেরতলিয়াতুম ওষুধটি রোগে সহস্র ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর অত্যন্ত কার্যকরী ও উপকারী ওষুধ। ডেঙ্গু রোগীর প্রথম অবস্থা থেকে এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়। শরীরে শীত শীত ভাব সহ কম্পন এবং শরীরের সমস্ত মাংসপেশি, হাড় ও জয়েন্টের ব্যথা এবং উচ্চ তাপমাত্রায় এই ওষুধ বিশেষ কার্যকরী। এই ওষুধ ডেঙ্গু রোগীর মাথা ব্যথা চোখের পিছনে সুতীব্র বেদনা-সহ বমি ভাব বা বমিতে অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া এই ওষুধ অত্যন্ত ব্যাপকভাবে ডেঙ্গু রোগে প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রতিষেধকের যে বিধান হোমিওপ্যাথিতেও আছে। যে কোনও রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে তার সর্বোচ্চ লক্ষণীয় লক্ষণগুলো যদি কোনও হোমিওপ্যাথিক ওষুধের লক্ষণের সঙ্গে মিল রয়েছে দেখা যায়, তাহলে সেই ওষুধ অপেক্ষাকৃত উচ্চশক্তিতে নির্দিষ্ট মাত্রায় এই রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য সম কার্যকরী ওষুধ হল- Belladonna, Bryonia, Alba, Rhus Tox, Ipecac, Gelsemium, Arsenic al-bum ইত্যাদি। ডেঙ্গু জ্বরে যেখানে রক্তকণিকা প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা সেখানে carica papaya ওষুধটি উপযুক্ত মাত্রায় প্রয়োগে অতি দ্রুত প্লেটলেট কাউন্ট বেড়ে যায়। Hemorrhagic dengue জ্বরে supportive care সহ অবশ্যই সূচিকিৎসকের বিধানে Hamamelic, Ipecac , Crotalus Horridus, Phosphorus ইত্যাদি ওষুধ অত্যন্ত কার্যকরী।(চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ওষুধ খাওয়া উচিৎ। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনই এই রোগে ওষুধ খাবেন না।)