গেরুয়া প্রচারে ঝড় নেতৃত্বের

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা রাজ্যে প্রচারে ঝড় তুললো পদ্মশিবির। শুক্রবার একদিনে সারা রাজ্যে দুপুর বারোটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত ২৯টি প্রকাশ্য সমাবেশ আয়োজন করলো গেরুয়া শিবির। এই সভাগুলিতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির একঝাঁক নেতা-নেত্রী। তালিকায় রয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মা,পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, প্রখ্যাত অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী, বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি বঙ্গের নেতা দিলীপ ঘোষ, সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, কেন্দ্রীয় নেতা সমীর ওরাং, সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা,কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য।

প্রতিটি সভাতেই প্রধান বক্তারা কেন্দ্রের মোদি সরকারের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের তথ্য তুলে ধরে আরও একবার ত্রিপুরায় ডবল ইঞ্জিনের সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।সেই সাথে ত্রিপুরায় কংগ্রেস-সিপিএম জোটকে অশুভ জোট এবং দুই দলের অস্তিত্বরক্ষার জোট বলে আখ্যায়িত করে তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন, ত্রিপুরায় লেফট-রাইট অর্থাৎ বাম ও ডান মিলে টু-ইন-ওয়ান হয়েছে নিজেদের স্বার্থ ও অস্তিত্বরক্ষার জন্য। আর মোদির নেতৃত্বে ভাজপা জোট উন্নয়নের দিশা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। ১৬ ফেব্রুয়ারী ভোটে ওই অশুভ জোটকে উচিত জবাব দেওয়ার আহ্বান জানান বিজেপি নেতৃত্ব।

হিমন্ত বিশ্বশর্মা, স্মৃতি ইরানি, শুভেন্দু অধিকারী, বিপ্লব কুমার দেব সহ প্রত্যেকেই বাম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ছিলেন আক্রমণাত্মক ভূমিকায়।এদিন আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মা কৃষ্ণপুর, সূর্যমণিনগর এবং বনমালীপুর তিনটি সভায় বক্তব্য রাখেন। তিনটি সভাতেই ২৫ বছরের বাম সরকার ও পাঁচ বছরের বিজেপি সরকারের কাজকর্মের তুলনা করে ফের একবার ভাজপা সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।সেই সাথে তুলোধোনা করেন বাম-কংগ্রেস জোটকে। প্রতিটি সমাবেশে মানুষের উপস্থিতি দেখে আসামের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, আরও বেশি আসন নিয়ে দ্বিতীয়বার বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠা শুধু সময়ের অপেক্ষা।

কারণ ত্রিপুরার মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। আগামী পাঁচ বছর রাজ্যবাসী,কাদের সরকার চায়। মানুষের স্বত:স্ফূর্ত উপস্থিতি, মানুষের অভিব্যক্তিতেই তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। যত ছোটই হোক, ভাজপা সরকার প্রতিষ্ঠা কেউ আটকাতে পারবে না।পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-সিপিএমের অশুভ অনৈতিক জোট মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। ত্রিপুরায় বীরজিৎ সিনহা, সুদীপ রায় বর্মণ ও জিতেন চৌধুরীর এটা শেষ নির্বাচন। আগামী দিনে আর কোনও নির্বাচনে এজেন্ট খুঁজে পাবে না তারা।শুক্রবার মজলিশপুর, কমলাসাগর, তেলিয়ামুড়া – তিনটি সভায় এই কথাগুলি বলেন,পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

তিনি বলেন, টানা পঁচিশ বছর ত্রিপুরা রাজ্যে সিপিএমের শাসনে হাজার হাজার খুন, নারী ধর্ষণ, জাতি- জনজাতি লড়াই, জাতপাতে সংঘাত ছাড়া মানুষ কিছুই পায়নি। ত্রিপুরাতে জঙ্গলের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তিনি বলেন, সিপিএমের নৌকায় ফুটো হয়ে গেছে।সেটা উপলব্ধি করতে পেরে বুদ্ধিমান মানিক সরকার হাল ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, মোদি সরকার কৃষাণ সম্মান নিধি,গরিব কল্যাণ যোজনা সহ বহু প্রকল্প চালু করে মানুষকে রক্ষা করে চলছে। ২০২০ সালের নির্বাচনে বিজেপি আবার রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে বলে দাবি করেন তিনি।৭ রামনগর এবং ৬ আগরতলা কেন্দ্রে আয়োজিত দুইটি জনসভায় নাম না করে কংগ্রেস ও সিপিএমের কয়েকজন নেতাকে নজিরবিহীন সমালোচনায় বিদ্ধ করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।

তিনি বলেন, রাজ্য রাজনীতিতে এতদিন কী চলেছে মানুষের কাছে এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে। রাজনীতি করার নামে এই রাজ্যের কিছু নেতা শুধু ব্যবসা করে গেছে। মানুষ সব বুঝে গেছে। এবার তারা জবাব পাবে। দুই দল একজোট হয়েও নিশ্চিত হতে পারছে না। মথার হাত-পা ধরে টানছে, কিন্তু মথা আর আসে না। বলেন,এবার ইতিহাস রচিত হবে। মানুষ তৈরি হয়ে আছে।এদিন খয়েরপুর, বামুটিয়া এবং মান্দাইবাজারে তিনটি সমাবেশ ও বিজয় সংকল্প র‍্যালিতে অংশ নিয়েছেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তিন সমাবেশে এবং র‍্যালিতে মানুষের উপস্থিতি দেখে মিঠুন বলেন, ত্রিপুরায় ফের একবার বিজেপি সরকার প্রত্যাবর্তন হচ্ছে এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

আর সেটা হলে ত্রিপুরার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে ত্রিপুরা নতুন রূপ পেয়েছে। এদিন মিঠুন চক্রবর্তীকে ঘিরে আমজনতার মধ্যে উৎসাহ ছিলো চোখে পড়ার মতো। এছাড়াও এদিন বক্সনগর ও চড়িলামে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ লকেট চ্যাটার্জী এবং উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ। বিশালগড়ে ও শান্তিরবাজারে আয়োজিত সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোনামুড়া ও ধনপুরে ছিলেন প্রতিমা ভৌমিক। রাইমাভ্যালি ও আমবাসায় ছিলেন সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা।

Dainik Digital

Recent Posts

ইন্ডিগো ফ্লাইটে বোমার হুমকি!! কলকাতা বিমানবন্দর হাই অ্যালার্ট!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উচ্চ সতর্কতা জারি করা…

18 hours ago

আওয়ামী লীগের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গেজেট নোটিফিকেশন দিয়ে আওয়ামী লীগের সবরকম কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসন…

19 hours ago

অবসর নিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সুপ্রিম কোর্টের ব্যাটন তুলে দিয়ে গেলেন বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের হাতে। বুধবার ১৪…

21 hours ago

সিঁদুর’ প্রসঙ্গে বিজেপির ১০ দিনের ‘তিরঙ্গা যাত্রা’!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে প্রচারে নামতে চলেছে বিজেপি।পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ায় ভারতীয় সেনা বাহিনীকে ধন্যবাদ…

21 hours ago

পুরনো ছন্দে ফিরছে উপত্যকা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে শ্রীনগর। শ্রীনগর বিমানবন্দরও মঙ্গলবার খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তা ঘাটে স্বাভাবিক…

21 hours ago

পঞ্জাবের বায়ুসেনাঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে সামরিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা প্রশমনের পর মঙ্গলবার…

22 hours ago