ইউজিসি বেতন থেকে বঞ্চিত কলেজ শিক্ষকরা!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)
FacebookFacebookTwitterTwitterRedditRedditLinkedinLinkedinPinterestPinterestMeWeMeWeMixMixWhatsappWhatsapp

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে
কলেজ শিক্ষকদের গড়ে ২০ লক্ষ টাকা গায়েব করে দিল রাজ্য সরকার।উল্টো গত সাত বছরেও সরকার কলেজ শিক্ষকদের ২১ মাসের ইউজিসির বর্ধিত বেতন কার্যকর করেনি।ফলে রাজ্যের প্রায় ৩৮৭ জন কলেজ শিক্ষক শিক্ষিকা তাদের চাকরি জীবনে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা আর পাচ্ছেন না। যদিও ইউজিসি বেতনক্রমের সম্পূর্ণ অর্থ সরাসরি প্রদান হয় কেন্দ্রীয় সরকারের মাধ্যমে।এমনকী রাজ্য সরকারকেও ২১ মাসের বেতনের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার প্রদান করেছিল বলে খবর।তবে সারা দেশের মধ্যে একমাত্র রাজ্য ত্রিপুরায় সরকারী ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বেতনক্রম প্রদানকালে ২১ মাসের বেতন গায়েব ত্রিপুরায়।
অভিযোগ কলেজ শিক্ষক
শিক্ষিকাদের ২১ মাসের বর্ধিত বেতন প্রদানের জন্যে প্রায় ৫০ কোটি টাকা প্রদান করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে কলেজের অধ্যক্ষ/অধ্যক্ষা, অধ্যাপক/অধ্যাপিকাদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।উচ্চশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর প্রতিশ্রুতি ছিল শিক্ষক শিক্ষিকাদের ২১ মাসের বেতন প্রদান করবে রাজ্য
সরকার।অবাক করার বিষয় হলো গত পাঁচ বছরেও সরকারের এই প্রতিশ্রুতিও কার্যকর করেনি।অভিযোগ উল্টো সাধারণ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকাদের বছরে ৩০ দিনের আর্নলিভ (অর্জিত ছুটি) পর্যন্ত প্রদান করেনি রাজ্য সরকার।রাজ্য সরকারের দ্বিচারিতা নিয়ে অধ্যাপক অধ্যাপিকার মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
২০১৯ সালের জুন মাসে রাজ্য সরকার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য ইউজিসি পে-স্কেল কার্যকরের লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে নোটিফিকেশন জারি করেছিল।এর আগে ২০১৯ সালের ৭ মার্চ রাজ্য মন্ত্রিসভা ত্রিপুরার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য ইউজিসি পে-স্কেল ২০১৬ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন।
এরপর এই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে রাজ্যব্যাপী প্রচারও চলে।
নির্বাচনও হয়।পুনরায় সরকারে আসে বিজেপি। পরিতাপের বিষয় রাজ্যের
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপিকারা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক
ঘোষিত পে-স্কেল ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারী থেকে পেলেন না।তা গায়েব করে দেয় সরকার এমনই অভিযোগ করলেন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকারা।রাজ্য সরকার ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর থেকে ইউজিসি বেতনক্রমের সিদ্ধান্ত কার্যকর করে।এর ফলে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা সহ অন্যান্য পেশাগত কলেজের বহু শিক্ষক কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষিত ইউজিসি পে- স্কেল থেকে বঞ্চিত হন।শুধু তাই নয়, সরকারের এই দায়সারা মনোভাবের খেসারত ও ক্ষতি চাকরি ও অবসর জীবনেও বহন করতে হচ্ছে অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের।
জানা গিয়েছে,ত্রিপুরার ইতিহাসে এই প্রথম কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা এভাবে ঠকানো হয়।১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯১৪ এবং ২০০৬ সালে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ইউজিসি এবং এআইসিটিই পে-স্কেল পেয়ে আসছেন তাদের নির্দেশিত ১ জানুয়ারী তারিখ থেকেই। রাজ্যের পূর্বতন কোনও সরকারই এই স্কেল নিয়ে অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের বঞ্চিত করেননি। দেশের সবগুলি রাজ্যে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারী থেকেই ইউজিসির বেতনক্রম কার্যকর হলেও একমাত্র ত্রিপুরা ব্যতিক্রম। আরও অবাক করার বিষয় হলো এই বেতন প্রদানে যে অর্থ লাগবে তার পঞ্চাশ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারী থেকে সমস্ত রাজ্য সরকারকে প্রদান করবে বলে ঘোষণা করে। কেন্দ্রীয় সরকার এই পরিমাণ অর্থ দিতে রাজি থাকলেও রাজ্য সরকার তা প্রদানে রাজি হয়নি। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর বিগত পাঁচ বছরেও পাওয়া যায়নি। কারণ যেখানে দেশের প্রায় সমস্ত রাজ্যে এমনকী ত্রিপুরার কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারী থেকে বেতনক্রম চালু হয়েছে। এমনকী বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সরকারের অবহেলার জন্য ত্রিপুরার কলেজ ও এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারী থেকে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সময়কালের অর্থাৎ ২১ মাসের বকেয়া ইউজিসি বেতনক্রম আর পাচ্ছেন না। যা রাজ্যে ইউজিসি বেতনক্রমের ক্ষেত্রে আগে কখনও ঘটেনি।
২০১৭ সালের ১ অক্টোবর স্কেল কার্যকরী হওয়ায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারী থেকে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে কেরিয়ার অ্যাডভান্সমেন্ট স্কিমে প্রমোশনপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের। এমনকী ২০০২ সালে চাকরিপ্রাপ্ত যে অধ্যাপক অধ্যাপিকারা এই সময়ের মধ্যে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হয়েছেন। তাদেরও একটি ইনক্রিমেন্ট হারাতে হয়। ফলে তাদের ইউজিসি পে-স্কেল থেকে এক প্রকার সরিয়েই দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা চাকরিতে দুই বছর জুনিয়র শিক্ষক শিক্ষিকাদের সমকক্ষ হয়ে গেলেন।একইভাবে ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সময়কালে যে অধ্যাপক অধ্যাপিকারা অবসর গ্রহণ করেছেন তারাও পেনশনের ক্ষেত্রে ব্যাপক আর্থিক বঞ্চনার মুখোমুখি হন। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারীর পর পিএইচডি এবং এমফিল ডিগ্রিপ্রাপ্ত অধ্যাপক অধ্যাপিকাদেরও তাদের প্রাপ্ত ইনসেনটিভ থেকে বঞ্চনা করা হয়। ইউজিসি নির্দেশিত এক পুরানো নোটিফিকেশন দেখিয়ে। উচ্চশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই ইউজিসি নির্দেশিত নোটিফিকেশনকে পুরানো সিদ্ধান্তকে কার্যত অগ্রাহ্য করা হয়েছিল।তাও মানেনি সরকার।ফলে ইউজিসি বেতনক্রম প্রদানের ক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত হলেন অধ্যাপক অধ্যাপিকারা।

FacebookFacebookTwitterTwitterRedditRedditLinkedinLinkedinPinterestPinterestMeWeMeWeMixMixWhatsappWhatsapp
Dainik Digital

Recent Posts

উড্ডয়নের সময় খুলে পড়ে গেল বিমানের চাকা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে আকাশে উড্ডয়নের পরই বিমানের একটি চাকা খুলে পড়ে যায়।…

10 hours ago

খারিজ নীরব মোদির জামিনের আবেদন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বৃহস্পতিবার হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদির নয়া জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল লন্ডন হাইকোর্ট।…

10 hours ago

ছত্রিশগড়ের জঙ্গলে প্রেসার কুকারে বোমা তৈরি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বৃহস্পতিবার পুলিশ ও ডিআরজির একটি দল খাল্লারি থানার অন্তর্গত চামেদা গ্রামের জঙ্গল থেকে…

10 hours ago

সেতুবন্ধনের কাজ করেন টিসিএস’রা -মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গত ২রা ডিসেম্বর থেকে শুরু করে দীর্ঘ প্রায় ছ'মাসের প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ হলো…

11 hours ago

বিজেপির মন্ত্রীর অপসারণ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করল পরিবার!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহের অপসারণ চাইল ভারতীয় সেনা অফিসার কর্নেল সোফিয়া কুরেশির পরিবার।…

11 hours ago

পরিষেবার মানোন্নয়ন চাই!!

ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম এ বছর বর্ষা মরশুমে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।এরকমই…

12 hours ago