আজকের বাস্তবতা বড় প্রশ্নের মুখে অতীত গৌরব ও ঐতিহ্য!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরা বিধানসভা রাজ্যের গণতন্ত্রের পীঠস্থান।এক সময় তার কার্যকারিতা এবং প্রাণবন্ত আলোচনার জন্য সুপরিচিত ছিল।কিন্তু বর্তমানে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠছে, এই ঐতিহ্য কি ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে?
ত্রিপুরা বিধানসভার কার্যপ্রণালী ও কার্যপরিচালনা বিধি, যা প্রচলিত ভাষায়’রুলস বুক’ নামে পরিচিত,রাজ্যের আইন প্রণয়ন ও গণতন্ত্রের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এতে মোট ২৫টি অধ্যায়ে ৩৬৯টি নিয়ম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে,যা অধিবেশন পরিচালনা থেকে শুরু করে ত্রিপুরা বিধানসভার বিভিন্ন কমিটির
কাজ পরিচালনা পর্যন্ত বিস্তৃত।অতীতে ত্রিপুরা বিধানসভা ছিল প্রাণবন্ত আলোচনার এক কেন্দ্রস্থল। সরকার এবং বিরোধী পক্ষের মধ্যে যুক্তিপূর্ণ বিতর্ক, গঠনমূলক সমালোচনা এবং জনগণের কল্যাণে সমাধান গ্রহণের ঐতিহ্য ছিল লক্ষ্যণীয়।এই পরিবেশকে সমৃদ্ধ করেছেন আইনজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ নেতারা। বর্তমান বিধানসভায় রতনলাল নাথ এবং সুদীপ রায় বর্মণ ছাড়াও বিরোধী দলনেতা জিতেন চৌধুরীর পরিষদীয় দক্ষতা ও প্রজ্ঞা বিধানসভার অধিবেশনে সকলেই লক্ষ্য করছেন। বিধানসভার সদস্য তথা বর্তমান সরকারের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা ইতিপূর্বেও বিধানসভার একজন নবাগত সদস্য হিসেবে প্রশংসনীয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। বর্তমানে বিরোধী দলের দলনেতা জিতেন চৌধুরী এবং সুদীপ রায় বর্মণের মতো প্রাজ্ঞ তথা অভিজ্ঞ সদস্যরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেও, সরকার পক্ষের অনেক সদস্যের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। বিশেষত, অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তাদের সক্রিয়তা ও আগ্রহের ঘাটতি বিষয়টি চোখে পড়ার মতো। একসময় সরকার পক্ষের বিধায়কদের প্রশ্নের সংখ্যা বিরোধী পক্ষের তুলনায় অনেক বেশি ছিল, যা এখন অনেকটাই কমে গেছে।অতীতে অধিবেশনে আলোচনার মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি গঠনমূলক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হতো।কিন্তু আজ সেই ধারাবাহিকতা ক্রমশ ম্রিয়মাণ।অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ ও হৈচৈ সাধারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা গঠনমূলক আলোচনার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করছে।
ফলে রতনলাল নাথের মতো অভিজ্ঞ নেতার ওপর নির্ভরশীলতা অত্যন্ত বেড়ে গেছে। তার তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা ও আইনি জ্ঞানের মাধ্যমে সরকার পক্ষের ভাবমূর্তি রক্ষা করার প্রয়াস প্রশংসনীয় হলেও,এই নির্ভরশীলতা সরকার পক্ষের অন্য বিধায়কদের দক্ষতার ঘাটতিকেই নির্দেশ করে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে,ত্রিপুরা বিধানসভার গরিমা ও কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করতে হলে উভয় পক্ষের বিধায়কদেরই নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। গঠনমূলক আলোচনার পরিবেশ পুন:প্রতিষ্ঠা করা এবং জনগণের কল্যাণে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই এক্ষণে সবচেয়ে জরুরি।
অতীতের উজ্জ্বল অধ্যায়ের সঙ্গে বর্তমানের তুলনা করার সময় একটাই প্রশ্ন সামনে আসে- ত্রিপুরা বিধানসভার ঐতিহ্য কি হারিয়ে যাচ্ছে? নাকি এটি নতুনভাবে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠার অপেক্ষায়? উত্তরটি সময়ই বলে দেবে।
বর্তমান মন্ত্রী রতনলাল নাথ, যিনি দীর্ঘদিন শুধুমাত্র বিরোধী দলের বিধায়কই নন, বিরোধী দলনেতা হিসেবেও যথার্থভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে পরিষদীয় মন্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন। এখনও তার অনবদ্য নেতৃত্ব এবং আইনি দক্ষতার জন্য সুপরিচিত তিনি। তবে বর্তমানে অধিবেশনে সরকার পক্ষের অনেক নতুন বিধায়কের মধ্যে পরিষদীয় বিষয়ের প্রতি আগ্রহের অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা পরিষদীয় গণতন্ত্রে সুষ্ঠু অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কিছুটা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

Dainik Digital

Recent Posts

ইন্ডিগো ফ্লাইটে বোমার হুমকি!! কলকাতা বিমানবন্দর হাই অ্যালার্ট!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উচ্চ সতর্কতা জারি করা…

43 mins ago

আওয়ামী লীগের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গেজেট নোটিফিকেশন দিয়ে আওয়ামী লীগের সবরকম কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসন…

2 hours ago

অবসর নিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সুপ্রিম কোর্টের ব্যাটন তুলে দিয়ে গেলেন বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের হাতে। বুধবার ১৪…

3 hours ago

সিঁদুর’ প্রসঙ্গে বিজেপির ১০ দিনের ‘তিরঙ্গা যাত্রা’!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে প্রচারে নামতে চলেছে বিজেপি।পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ায় ভারতীয় সেনা বাহিনীকে ধন্যবাদ…

3 hours ago

পুরনো ছন্দে ফিরছে উপত্যকা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে শ্রীনগর। শ্রীনগর বিমানবন্দরও মঙ্গলবার খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তা ঘাটে স্বাভাবিক…

4 hours ago

পঞ্জাবের বায়ুসেনাঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে সামরিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা প্রশমনের পর মঙ্গলবার…

5 hours ago