অসাধ্য সাধন করলো প্রাণজিৎ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-কথায় আছে লক্ষ্য স্থির করে চেষ্টা চালিয়ে গেলে, যে কোনও অসাধ্যই সাধন করা যায়। শত বাধা থাকলেও, সব বাধা হার মানে অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে।

সেটাই করলেন কাঞ্চনপুর মহকুমার শ্রীরামপুর গ্রামের যুবক প্রাণজিৎ শুক্ল বৈদ্য। পিতা সোনাতন শুক্ল বৈদ্য, মাতা – সুকৃতি শুক্ল বৈদ্য। প্রাণজিৎ এর বয়স যখন ৬ মাস, তখন তাঁর পিতা এবং বড় ভাইকে জঙ্গিরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। তারা আজও ফিরে আসেনি। পিতা এব বড় ভাইকে অপহরন করার পর, প্রাণজিৎ এর মা মানুষের বাসায় কাজ করে বাকি তিন সন্তান সহ প্রাণজিৎ কে বড় করে তুলেছেন। সে এক করুণ ইতিহাস।

তিন সন্তানের মধ্যে একমাত্র প্রাণজিৎকেই কষ্ট করে পড়াশোনা করিয়েছে তাঁর মা। অন্য সন্তানরা কেউ পড়াশোনাই করতে পারেনি। এই ভাবেই জীবন অতিবাহিত হয়েছে প্রাণজিতের। চরম দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে ২০১৭ সালে কাঞ্চনপুর দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে। তারপর আগরতলা এমবিবি কলেজে শিক্ষাবিজ্ঞান বিভাগে ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট ডিভিশন নিয়ে স্নাতক হয় ২০২০ সালে। এরপর ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় মাস্টার ডিগ্রি তে। সেখান থেকে ২০২২ সালে ৯৪.৫ শতাংশ মার্কস নিয়ে শিক্ষা বিজ্ঞানে প্রথম স্থান অর্জন করে। গত ১৬ ডিসেম্বর ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ড. রাজকুমার রঞ্জন সিং এর হাত থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করে প্রাণজিৎ। তার এই হার না মানা লড়াইয়ে মা সুকৃতি শুক্ল বৈদ্য এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের অবদান অনস্বীকার্য।এম এ পাস করার পর প্রাণজিৎ এমবিবি কলেজে শিক্ষা বিজ্ঞান বিভাগে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্তি পায়।
পড়াশুনার পাশাপাশি প্রাণজিৎ একটা শিক্ষামূলক youtube চ্যানেল খুলে ২০২০ সালের করোনার সময়। যাতে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষামূলক তথ্য সরবরাহ করতে পারে।বর্তমানে তাঁর YouTube চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার ১ লাখের এর উপরে। অদম্য ইচ্ছে, ও কিছু করার মানসিকতা যদি থাকে, কোনও বাধাই এগিয়ে যাওয়ার পথকে আটকাতে পারে না। সেটা আবারও প্রমাণ করলো কাঞ্চনপুরের প্রাণজিৎ শুক্ল বৈদ্য।

Dainik Digital: